রোববার (২০ জুলাই) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরস্থানে “গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা—সবুজ পল্লবে স্মৃতি অম্লান” শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এই কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল ও 'আমরা বিএনপি পরিবার'।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে, জুলাই আন্দোলনে নিহত প্রত্যেক শহীদের নামে একটি করে নিমগাছ রোপণ করা হয়। সেই মুহূর্তে আবেগঘন পরিবেশে বক্তব্য রাখেন ফখরুল।
এক শহীদ মায়ের আর্তনাদ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “একজন মা বলছিলেন—যে ছেলেটার জন্য পরিবার স্বপ্ন দেখেছিল, তাকে কেমন নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলো। গুলি করে মারা হয়েছে, তারপর ভ্যানে তোলা হয়েছে, মৃত না জীবিত তা নিশ্চিত না হয়ে আরও কয়েকটি মরদেহের সঙ্গে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “চিন্তা করুন, আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক। ১৯৭১-এ রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। অথচ আজ সেই দেশের পুলিশ-প্রশাসন, যাদের বেতন চলে জনগণের করের টাকায়, তারাই আমাদের সন্তানদের হত্যা করছে—পুড়িয়ে মারছে। এর চেয়ে নির্মম আর কী হতে পারে?”
এই অমানবিকতার দায় হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করে ফখরুল বলেন, “এই নিষ্ঠুরতা, এই অমানবিকতা কোনোদিন ক্ষমা করা যায় না। হাসিনা মানবজাতির কলঙ্ক। হাসিনা মায়েদের কলঙ্ক। আমাদের প্রথম দায়িত্ব হবে এদের বিচার করা।”
আহত ও শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “আজই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বলব—দলের পক্ষ থেকে একটি ফান্ড গঠনের জন্য। যাতে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যায়। ইতোমধ্যে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ থেকে সহায়তা শুরু হয়েছে।”
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল এবং ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন।
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য শুধু শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক তীর্যকতা নয়, বরং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির গভীর ক্ষত চিহ্নিত করার একটি চেষ্টা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একইসাথে শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের কথা বলে তিনি দলীয় দায়িত্বের মানবিক দিকটিও তুলে ধরেছেন।