চরফ্যাশনে গত কয়েকদিন যাবৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক)-এ অপপ্রচারে সয়লাব। চরফ্যাসন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা সাবেক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম দুলালকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচার চলছে। একটি কুচক্রি মহল তাকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কু-চক্রিমহলটি তার পারিবারিক বিরোধকে পুজি করে হীন কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে বলে ১৭ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন শহিদুল ইসলাম দুলাল।
প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে দুলাল জানান, তার আপন বড় দুই ভাই নুরনবী সেন্টু ও হাজী ডাঃ আলমগীরের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার দিন ১৪ এপ্রিল, বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় সাবেক প্রাণিসম্পদ ডাঃ আলমগীরের পুকুরের ঘাটলা সংলগ্ন ওয়াল সংস্কার করতে গেলে বড় ভাই নুরনবী সেন্টু ও তার ছেলে সাবেক কমিশনার আওয়ামী সন্ত্রাসী তরিকুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে মিলনের ছোট ভাই মন্টু, মঞ্জু ও ফারুক সহ ৫/৭ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে ডাঃ আলমগীরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তার ডাক চিৎকারে স্ত্রী হাজী নারগিস বেগম এগিয়ে আসলে তাকে গাছে বেধে মারধর করে। হামলাকারীরা হাজী ডাঃ আলমগীর ও তার স্ত্রী নারগিসকে মারধর করে মুমুর্ষ অবস্থায় ফেলে চলে যায়। যাওয়ার সময় নারগিসের গলায় থাকা ১ ভরি ১০ আনা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। তাদের উদ্ধারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করে আহত করে। তারা হলেন মাইসা, সুমাইয়া, মাহমুদা, কালু, আরিফ। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় আহত আলমগীর ও স্ত্রী নারগিস-কে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনা চলাকালীন উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী আলহাজ্ব মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া সহ আমি চরফ্যাসন বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে নেতাকর্মীদের সাথে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এমন সময় প্রতিবেশী শাজাহান আমার ভগ্নিপতি সানাউল্লাহ-কে মারামারির বিষয়টি মোবাইলে জানায়। ভগ্নিপতির কাছে ঘটনাটি শুনে চরফ্যাশন থানায় ওসি মিজানুর রহমান-কে বিষয়টি অবগত করি। চরফ্যাশন থানা এসআই মনির ঘটনাস্থল তদন্ত করে চরফ্যাশন হাসপাতালে গিয়ে আহত আলমগীর ও নারগিসকে চিকিৎসারত অবস্থায় পরিদর্শন করে।
দুলাল আরো জানান, তাদের চিকিৎসার খোজ খবর নিতে হাসপাতালের প্রবেশ মুখে পৌছা মাত্রই পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী হামলাকারী মঞ্জু, ফারুক সহ সন্ত্রাসী দল তাকে গালমন্দ করে। এরপর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে গেলে ফারুক আবার গালমন্দ করে। যার কারণে উপস্থিত জনতার রোষানলে পড়ে হাসপাতালে অনাকাঙ্খিত ঘটনা সূত্রপাত হয়। তারা পরিকল্পিতভাবে ঝামেলা বাজিয়ে এর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বিরোধীয় ভূমিতে দুলালের এক তিল সম্পত্তি কিংবা স্বার্থসিদ্ধ কোনটাই নেই।
আহত ডাঃ আলমগীরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি তার বড় ভাই নুরনবী সেন্টু থেকে তজুমদ্দিন চাকুরী করাবস্থায় জমি ক্রয় করে। টাকা পরিশোধের পর নূরনবী সেন্টু তাকে জমি দলিল করে দেয়। যার মৌজা: উত্তর মাদ্রাজ, জে.এল নং-৮৪, খতিয়ান নং-২৪৫, এস এ দাগ নং-৩৯৭, ৩৯৪, ৪১০,৪১১, ৪১২, দিয়ারা দাগ নং-৮৭২, ৮৭৩, জমির পরিমাণ: ৩২ শতাংশ। ওই জমিটি নুরনবী সেন্টু থেকে দাবি করলে আলমগিরকে প্রায় সময় প্রাণ নাসের হুমকি দেয়। কারণ তার চারটি ছেলে মিলন, মন্টু, ফারুক ও মঞ্জু আওয়ামী সন্ত্রাসীর গডফাদার। তার লালিত চার ভাই সব সময় তাকে মারধর করার চেষ্টা করেন। তিনি ১৭ বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, চরফ্যাসন থানা প্রশাসনের কাছে গেলেও আওয়ামী সন্ত্রাসী মিলনের ভয়ে কেউই বিচার করেননি। তিনি বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এর ঘটনার সত্যতা জানতে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ ও নুরু শাহজি সহ অনেকেই জানান, হামলাকারীদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তবে ঘটনার দিন প্রাণী সম্পদ ডাক্তার আলমগীর ও তার স্ত্রীর উপর জুলুক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এর সঠিক বিচার দাবি করেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে ঘটনাস্থলে খোঁজে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে কল করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় চরফ্যাশন থানা অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।