চিলমারী উপজেলার শাখাহাতি আবাসন প্রকল্প ১ টি ব্রহ্মপুত্র নদের গ্রাসে বাকী দুটিও ভাঙ্গনের তীব্র হুমকিতে রয়েছে।

   "চিলমারীর দুঃখ এই ব্রহ্মপুত্র নদ"
অব্যাহত ভাঙ্গনে দিশেহারা চরাঞ্চলের মানুষ । 
চিলমারী উপজেলার শাখাহাতি আবাসন প্রকল্প ১ টি ব্রহ্মপুত্র নদের গ্রাসে বাকী দুটিও ভাঙ্গনের তীব্র হুমকিতে রয়েছে। 
ইতোমধ্যে  অষ্টমী চর ইউনিয়নে খোর্দ  বাঁশপাতার  আবাসন প্রকল্পটি প্রশাসনের নিকট হস্তান্তরের আগেই নদী গর্ভে বিলীন  হতে যাচ্ছে । ইউপি সদস্য সেলিম জানান, মোট১০০টি ব্যারাকের মধ্যে ৫টি ব্যারাক নদের জলে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি ব্যারাকও বিলীন হওয়ার পথে। এসব মানুষের মাঝে হা-হা-কার রব উঠেছে। হত দরিদ্র এই মানুষগুলো কোথায় আশ্রয় নিবে তা নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। 
অপরদিকে একই ইউনিয়নের নিউছালিপাড়া চরের আবাসন প্রকল্পটি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে সেটিও মারাত্মক নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। নয়ারহাট ইউনিয়নের ২০০ বিঘা ও ফেইচকার চরের বাদলের মোড়ের সন্নিকটে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফেইচকার চরের বিশাল বসতি এখন সংক্ষিপ্ত হয়ে বাদল মোড়ের দিকে আশ্রয় নিচ্ছে চর এলাকার মানুষজন। এখানেই গড়ে উঠেছে নতুন বাজার। সেটিও এখন নদের ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। 
চিলমারী ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল এলাকায় এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় জিও ব্যাগ দিয়ে নদের ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে সেগুলো এখন ভেস্তে গেছে। 
এ অঞ্চলের চর শাখা হাতি আবাসন প্রকল্পে ১২০ টি পরিবার এবং তাদের ভিটেমাটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় অন্যত্র ঘর বাড়ি ভেঙে নিয়ে গেছেন। চর শাঁখা হাতির দক্ষিণ দিকে বইল মনদিয়ার খাতা এলাকায়ও ১৮০ টি পরিবার ভাঙ্গনের  মুখে পড়ে তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়েছেন। 
শাখাহাতি ও বইল মনদিয়ার খাতা চর বসতি লোকজনের  স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত একমাত্র সরকারী কমিউনিটি ক্লিনিক টি ভেঙে ভেসে গেছে। চরশাখাহাতি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এক বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদে ভেঙ্গে গেলেও আজ অব্দি তা নতুন করে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই চলাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, কবরস্থান, মাদ্রাসা ও দোকানপাট সহ বসতভিটা ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে। চরাঞ্চলের এই নদের ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন সরকারি উদ্যোগ ও পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনের পর দিন নদের কড়াল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের বসতি ও ফসলি জমি সহায় সম্বল হীন হয়ে পড়েছে চরের লোকজন। তাহারা মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং তাদের খাদ্য, বস্ত্র,বাসস্থানের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কারণে 
নদের স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তন ও নদের তীরবর্তী এলাকায় অপরিকল্পিকত বসতবাড়ী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও নদী ভাঙ্গন পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তুলছে। 
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকায় কালিরকুড়া নদীর ডানতীর রক্ষা বাঁধেও  ধস দেখা দিয়াছে যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলছে। 
আর এ নিয়েই চলছে চর বসতিদের ঘর বসতি।
চিলমারীর চর গুলোকে  ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন রোধে সরকারের জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন চরবাসী। সচেতন মহল মনে করেন,
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, নদী খনন এবং পুনর্বাসণ করার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর কষ্ট লাঘব করা যেতে পারে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে খাদ্য সামগ্রী সহায়তা করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন  ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।