বিয়ের ১২ বছরে দুই কন্যা সন্তানের পর এবার জোড়া লাগানো পেটের যমজ কন্যাশিশুর জন্ম দিয়েছেন আসমা বেগম নামের এক প্রসূতি। মঙ্গলবার (৫ ই আগষ্ট) রাতে লাকসাম একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছোট অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে তাদের জন্ম হয়। বাচ্চা দুটির নাম রাখা হয়েছে সাফা ও মারওয়া।


প্রসূতী আসমা বেগম নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট  উত্তর ইউনিয়নের  বেকামলিয়া মধ্যমপাড়ার তৈয়বআলীর স্ত্রী, আসমার স্বামী তৈয়ব আলী একজন  দিনমজুরের কাজ করেন।

আসমা গর্ভবতী হওয়ার ৮ মাসের মাথায় আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে যমজ শিশুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা তথা জোড়া লাগার বিষয়টি জানা যায়নি। ৫ই আগস্ট  আসমার প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে লাকসামের গ্রীন লাইফ হসপিটাল  নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছোট অস্ত্রোপোচারের মাধ্যমে শিশু সাফা ও মারওয়ার জন্ম হয়। বর্তমানে তারা  লাকসাম গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ৩১১ নং কেবিনে  গাইনী সার্জন ডাক্তার কামরুন নাহার, শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ওমর ফারুক, এবং মেডিসিন ও সার্জারি স্পেশালিস্ট ডাক্তার রায়হানুল হকের  চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা এবং হাসপাতালের পরিচালক মনির হোসেন জানান বাচ্চা দুটি  তাদের চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং সুস্থ রয়েছে। 

শিশু সাফা এবং মারওয়ার পিতা সাংবাদিকদের বলেন  বলেন, আমি নিজে একজন দিনমজুর। একটি মুরগির খামারে কাজ করি। আর্থিক অবস্থা ভালো না। এ অবস্থায় চিকিৎসক বাচ্চাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি বেসরকারি ও বিভিন্ন দাতা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শিশু সাফা মারওয়ার মা আসমা বেগম বলেন বলেন, বিয়ের পর আমার আরো দুটি বড় কন্যা সন্তান রয়েছে, আবার যখন জানতে পারলাম আমার গর্ভে সন্তান এসেছে তখন অনেক আনন্দিত ছিলাম। সন্তান জন্মের পর যমজ দুটি মেয়ে সন্তান  দেখে আমরা সবাই চিন্তিত। আমার সন্তানদের সুচিকিৎসা চাই। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা নেই। ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা চালানো আমাদের পক্ষে অসম্ভব। এলাকার বিত্তবানদের সহায়তায় আমার সন্তানদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

লাকসাম গ্রীন লাইফ হসপিটালের মেডিসিন ও সার্জারি স্পেশালিস্ট ডাক্তার রায়হানুল হক বলেন প্রাথমিকভাবে যমজ দুই শিশুর মাথা একসঙ্গে জোড়া লাগা বলে মনে হচ্ছে। তবে তারা পৃথকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশেই এটার উন্নত চিকিৎসা রয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার করবো।

হাসপাতালের পরিচালক মনির হোসেন বলেন, আমাদের হাসপাতালে আসার পর গাইনী সার্জন ডাক্তার কামরুন নাহার সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল ছোট একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশু দুটিকে এবং প্রসূতিকে সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন, তবে পরবর্তীতে দেখে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে রেফার করবেন। কারন তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো প্রয়োজন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে শিশু দুটি পরিবারকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।