পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) সংসদীয় আসনে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদ এই দুই রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে

পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) সংসদীয় আসনে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদ এই দুই রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মামুন সরাসরি অভিযোগ করেছেন, গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি ভিপি  নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নিজ দলে টেনে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তিকে দুর্বল করার  অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছেন।


১৫ জুন রবিবার গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে হাসান মামুন বলেন, ‘গলাচিপায় স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশ থাকলেও হঠাৎ করে ভিপি নুরের উত্থানের পর থেকে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত তার কোনো কার্যকর রাজনৈতিক ভিত্তি ছিল না, এমনকি কোনোরকম সাংগঠনিক কাঠামোও গড়ে ওঠেনি। এরপর তিনি সাবেক আওয়ামী লীগ নেতাদের গণ অধিকার পরিষদে নিয়ে আসেন।’


তিনি দাবি করেন, যারা পূর্বে সহিংসতা, নির্বাচনী অনিয়ম এবং বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা-মামলায় জড়িত ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন গণঅধিকার পরিষদের হয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এমনকি এসব ব্যক্তির নামও স্থানীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি  অভিযোগ করেন।


হাসান মামুন আরও অভিযোগ করেন, ‘গলাচিপা ও দশমিনার বিভিন্ন এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের ব্যানারে এখন সংগঠিত হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক নেতাকর্মীরা। এমনকি কয়েকজন আইনজীবীকেও এতে জড়িত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যারা অতীতে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।’


তিনি উদাহরণ হিসেবে মাকসুদুল হক ও আবু ইউসুফ পাশার নাম তুলে বলেন, তারা একসময় আওয়ামী ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় থাকলেও এখন গণঅধিকার পরিষদের ছায়ায় সুবিধাভোগ করছেন। এমনকি চর বিশ্বাসে সংঘর্ষে ভিপি নুরের পরিবারের সদস্যদের নামও উঠে এসেছে।


হাসান মামুন দাবি করেন, ‘ভিপি নুর নিজেই একাধিকবার বলেছেন তিনি একসময় ছাত্রলীগ করতেন। তার পরিবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল।’


তিনি বলেন, ‘তার ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের এখন গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্বে দেখা যাচ্ছে।’


তিনি আরও জানান, ‘গণঅধিকার ব্যানারে হামলা চালিয়ে বিএনপি কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রমাণসহ তথ্য দলীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং শিগগিরই পুনর্বাসিত আওয়ামী নেতাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’


তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুর। তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘যাদের পুনর্বাসনের কথা বলা হচ্ছে, তাদের অনেকেই একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গণঅধিকার গঠনের শুরু থেকেই তারা আমাদের সঙ্গে আছেন।’


এই বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয় ১১ জুন গলাচিপা অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত ছাত্র অধিকার পরিষদের সভায় নুরুল হকের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। এরপর পাল্টাপাল্টি মিছিল, সংঘর্ষ এবং উত্তেজনার জেরে প্রশাসন ৪৮ ঘণ্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়।
বর্তমানে দুই পক্ষ বড় কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করলেও রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  কথার লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

 স্থানীয় বিএনপির নেতারা প্রকাশ্যে বলছেন, তারা দলের বাইরে কাউকে পটুয়াখালী-৩ আসনে মেনে নেওয়া হবেনা।