সমুদ্রের অগভীর জলে, পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক নীরব ঘাতক – স্টোনফিশ (Synanceia verrucosa)। এর অসামান্য ছদ্মবেশ এতটাই নিখুঁত যে, একে পাথর বা প্রবাল থেকে আলাদা করা প্রায় অসম্ভব। আর এই কারণেই এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ হিসেবে পরিচিত।

যখন কোনো অসাবধানী মানুষ এর উপর পা রাখে, তখন এর পিঠের ১৩টি ধারালো কাঁটা ত্বকে বিদ্ধ হয়। এই কাঁটাগুলো বিষগ্রন্থির সাথে সংযুক্ত, এবং পায়ের চাপে বিষ সরাসরি পেশী ও টিস্যুতে প্রবেশ করে।

স্টোনফিশের বিষে থাকে ভেরুকোটক্সিন (Verrucotoxin) নামক শক্তিশালী প্রোটিন, যা স্নায়ুতন্ত্র, পেশী, এবং হৃদপিণ্ডকে আক্রমণ করে। দংশনের সাথে সাথেই শুরু হয় অসহনীয়, তীব্র ব্যথা, যা দ্রুত পুরো অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে । অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে: 
১. আক্রান্ত স্থানে দ্রুত ফোলা
২. বমি বমি ভাব
৩. মাসল প্যারালাইসিস
৪. শ্বাসকষ্ট এবং 
৫. অনিয়মিত হৃদস্পন্দন । সময়মতো চিকিৎসা না পেলে টিস্যু নেক্রোসিস (কোষের মৃ":ত্যু) এবং এমনকি মৃ"*ত্যু"ও হতে পারে।

যদি দুর্ভাগ্যবশত কেউ স্টোনফিশের দংশনের শিকার হন, তবে দ্রুত জল থেকে বেরিয়ে আসুন এবং দংশিত স্থানটি ৪০-৪৫°C তাপমাত্রার গরম জলে ২০-৯০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। গরম জল বিষের কার্যকারিতা কমাতে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে যান। সেখানে অ্যান্টিভেনম (antiserum) এবং শক্তিশালী ব্যথানাশক প্রয়োগ করা হয়, যা জীবন বাঁচাতে পারে।

মনে রাখবেন, স্টোনফিশ আক্রমণাত্মক নয়, এটি কেবল আত্মরক্ষার জন্য বিষ ব্যবহার করে। তাই সমুদ্রের অগভীর জলে হাঁটার সময় বা প্রবাল প্রাচীরের আশেপাশে থাকার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকুন।