তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, প্রতারণা, অপহরণ মামলা এবং সর্বশেষ দর্শন মামলার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাকে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এবার তার টার্গেট—নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী নাজির মো. ইকরাম হোসেন। অভিযোগ উঠেছে, তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে ধ্বংস করার হুমকি ও পরিকল্পনায় লিপ্ত এই নারী একটি গোটা পরিবারকে ভয় ও লজ্জার মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।
একই কাহিনি, বদল শুধু চরিত্র—প্রেম থেকে শুরু, শেষে মামলা আর মোটা অঙ্কের টাকা!
সূত্র বলছে, প্রথম স্বামীর কাছ থেকে মোটা কাবিন আদায় করে বিচ্ছেদ। এরপর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে প্রেম—সেখানেও মামলা, টাকা, বিচ্ছেদ। তৃতীয় বিয়ে টিকেছিল মাত্র ৯ দিন! প্রতিবারই একই গল্প—ভালোবাসা, বিশ্বাসভঙ্গ, মামলা এবং মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা।
২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হয় (নরসিংদী মডেল থানায় মামলা নং-২৮)। সেখানে তিনি দুই মাস কারাবাসে ছিলেন।
গাজী হোটেল নাটক: নেই রুম, নেই প্রমাণ—তবু মামলার বই ভরা!
সর্বশেষ অভিযোগে হোসনা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ইকরাম হোসেন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গাজী হোটেলে নিয়ে প্রতারণা করেন। তিনি ‘দর্শন মামলা’ করেন।
কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় নাটকীয়ভাবে—গাজী হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের হোটেলে মামলায় উল্লেখিত AX নম্বরের কোনো রুমই নেই! পুলিশের তদন্তে দেখা যায়, হোসনার দাবি করা রুমের বিবরণ এবং বাস্তবতা আকাশ-পাতাল তফাৎ। বারবার প্রশ্নে বিভ্রান্তিকর উত্তর দেন হোসনা।
“পরিবার ভাঙার চক্রান্ত”—কাঁদছেন সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী
ভুক্তভোগী ইকরাম হোসেনের স্ত্রী রুপা বেগম জানান, “আমার স্বামী নির্দোষ। এই নারী তাকে ফাঁসিয়ে আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করতে চাইছে। সে আমার বাসায় এসে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।”
এই ঘটনায় নরসিংদী সদর মডেল থানায় জিডি করা হয়েছে। ইকরামের পরিবার বর্তমানে চরম মানসিক ও সামাজিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
আইনের অপব্যবহার নাকি সাজানো নাটক?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, কেউ যদি পরিকল্পিতভাবে প্রেম ও বিয়ের নাটক সাজিয়ে মামলা করে আর্থিক সুবিধা নেয়, তবে তা ফৌজদারি অপরাধ। এতে সমাজে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়, প্রকৃত ভুক্তভোগীরা বিচারহীনতায় ভোগেন।
সতর্ক না হলে কে পরবর্তী শিকার?
একজন নারী যদি একই প্যাটার্নে প্রেম, বিয়ে ও মামলার মাধ্যমে একের পর এক পুরুষকে নিশানা করেন—তবে তা কি ব্যক্তিগত ঘটনা? নাকি এ এক সাংগঠনিক প্রতারণা? স্থানীয়দের প্রশ্ন—এই চক্রকে থামাবে কে?
এই প্রতিবেদন তৈরিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য যাচাই ও আইনানুগ ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে। যেহেতু তদন্ত চলমান, তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান—সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রতারণা প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।