হারার আগে হারেনি বেনাপোল সীমান্তের পুটখালী নামক গ্রামের এক আত্নপ্রত্যায়ি যুবক নাসির উদ্দিন

হারার আগে হারেনি বেনাপোল সীমান্তের পুটখালী নামক গ্রামের  এক আত্নপ্রত্যায়ি যুবক নাসির উদ্দিন। সীমান্ত এলাকায় তার নিজ গ্রামে সন্তান স্নেহে গরু লালন পালন করে বছরে আয় তার ৫ কোটি টাকা। গরুর মাথার উপর ফ্যান খামার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং তদারকির জন্য রয়েছে প্রায় শতাধিক লোক। বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে শৈশবে তার হয়নি লেখা পড়া। কিন্তু জীবন যুদ্ধে হার না মেনে বাবার সাথে নেমে পড়েন কর্মজীবনে। সেই থেকে সে বাবার সাথে নানা ধরনের ব্যবসার এক পর্যায়ে ৭/৮ টি গরু নিয়ে গড়ে তোলে একটি খামার । সেই খামার থেকে সে লাভ ও পায়। এরপর আর থেমে থাকেনি নাসির উদ্দিন। বর্তমানে তার খামারে ৮০০ টি বিদেশী বড় জাতের গরু, ভারতের কটা মহিষ,দুম্বা, ভেড়া, ছাগল  সেই সাথে এ বছর সে খামারে তুলেছে মরুভুমির জাহাজ উট। তার খামারে আছে ১৫ টি উট।  

বেনাপোল পোর্ট থানার সীমান্ত ঘেষা গ্রাম পুটখালী। পাশে ইছামতি নদী। এই অবহেলিত সীমান্ত ঘেষা গ্রামে জন্ম নিয়েছে নাসির উদ্দিন। এক সময় এই গ্রামে যেতে গেলে কোন ভ্যান রিক্সা যেতে চাইত না। বর্তমানে সে গ্রাম শহরের মত হয়েছে উন্নত। লেখা পড়া না জানলে ও কম কথা বলা ছেলে নাসির অদম্য মেধা নিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছে শার্শা উপজেলার সব থেকে বড় খামার। যেখানে কাজ করে প্রায় শতাধিক লোক। তাদের ওই খামারে থেকে সন্তান স্নেহে করতে হয় গরু লালন পালন। এসব লোকদের কর্মদিয়ে বেকারত্ব দুর করেছেন নাসির উদ্দিন। এরা এখানে মাসিক ১০-১৮ হাজার পর্যন্ত বেতন ছাড়া কিছু লোক তিন বেলা খাবার ও পায়। আর দুপুরে প্রতিদিন ওই ১০০ লোকের খাবার ও এখানে রান্না করা হয়।

নাসির এর খাটালে কর্মরত আল-আমিন বলেন, নাসির ভাইয়ের রয়েছে প্রায় ৮ টি খামার। এই খামারগুলোতে দেশী বিদেশী জাতের গরু রয়েছে। প্রায় সব বড় জাতের গরু। ৬ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত দামের গরু  রয়েছে । এবছর ৮০০ গরু বিদেশী রাজস্থানের ছাগল, ভেড়া মহিষ বাদে রয়েছে বিশেষ  আকর্ষন ১৫ টি উট। যার কিছু উট ইতিমধ্যে বিক্রি ও হয়েছে। সব থেকে বড় উটটি বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ টাকায়। আমরা যারা কাজ করি তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো আছি।

খাটালে কর্মরত ওলিয়ার হোসেন বলেন, এখাটালে গরু লালন পালন করা হয় কোরবানির উদ্দেশ্য। প্রতিবছর এসব গরু বিক্রি করে আবার স্থানীয় হাট থেকে গরু ক্রয় করে সারা বছর লালন পালন করা হয় । আর কোরবানির সময় বেশী দামে এসব গরু বিক্রি করা হয়। এছাড়া এখানে রয়েছে গাভি । যা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়।

খামার মালিক নাসির উদ্দিন বলেন , গরু পালন করতে হয় সন্তান স্নেহে। এদের মাথার ওপর পাখা এবং গরুর বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য রয়েছে মেশিন। প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ  টাকার খাদ্য দিতে হয়। প্রতি বছর রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম থেকে আসে ব্যাপারীরা। এছাড়া ট্রাকে করে এসব গরু ঢাকা-চট্টগ্রাম নিয়েও বিক্রি করা হয়।কোরবানি আসার আগে গরুর পেছনে খরচও বেড়ে যায়। গায়ে মাংস বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন একটু বেশি বেশি করে খাবার দিতে হয়। যাতে প্রতিটি গরুর প্রতিদিন এক কেজি করে মাংস বৃদ্ধি পায়। সারা বছর গরু লালন পালন করে কোরবানির বাজার ধরে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া বিক্রি করে তার প্রায় ব¦ছর ৫ কোটি টাকার ওপরে লাভ হবে। প্রতিটি কর্মচারীকে মাসে ১০ থেকে ১৮ হাজার পর্যন্ত বেতন দিতে হয়।তারপর তাদের অসুখ বিসুখ ও দেখতে হয়। এছাড়া গরুর জন্য সার্বোক্ষনিক পশু ডাক্তার থাকে। তবে সব থেকে আমি তৃপ্তি পাই আমি আমার খামারে ১০০ লোকের উপরে কর্মসংস্থান করতে পেরেছি।