মাগুরায় আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখের ফাঁসি ও অন্য ৩ আসামির বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে হিটু শেখের ফাঁসির আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করলেও অপর ৩ আসামিকে খালাস দেওয়ায় অসন্তুষ্ট আছিয়ার মা।
এর আগে শনিবার সকাল ৯টায় মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় দেন। রায়ে প্রধান আসামি হিটু শেখের ফাঁসির রায় দেওয়া হয়।
বাকি তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন— শিশুটির বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও দেবর।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শিশুটির মা বলেন, হিটু শেখের ফাঁসির আদেশ হলেও অন্য তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ রায় আমরা মেনে নিতে পারছি না।
বাকি তিন আসামিকে কেন খালাস দেওয়া হয়েছে— আদালতের পর্যবেক্ষণে এটা জানানো হয়নি। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করব।
মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, বাদী এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়নি। তাই আমরা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবো- এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা যায় কি না।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া অ্যাটর্নি জেনারেলের সমমর্যাদাপ্রাপ্ত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, তিনজনের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আলামত নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় তাদের তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মাগুরার আলোচিত এই ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা খাতুন বাদি হয়ে মাগুরা সদর থানায় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখ, জামাই সজিব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা জাহেদা খাতুনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পুলিশ ঘটনার পর ৪ আসামিকেই গ্রেপ্তার করে। এ মামলায় ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। ২৮ জন সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমাণ শেষে ১৪ মে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে আজ রায় ঘোষণা হয়।
উল্লেখ গত ১ মার্চ সদর বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায় আছিয়া। সেখানে সে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সর্বশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।