রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার মৈশালা (পালপাড়া) গ্রামের ২ সন্তানের জননী গৃহবধূ দীপা রানী পাল (২২) আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার আসামী সালাম বিশ্বাস (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।

রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভার মৈশালা (পালপাড়া) গ্রামের ২ সন্তানের জননী গৃহবধূ দীপা রানী পাল (২২) আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার আসামী সালাম বিশ্বাস (২৬) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০। গ্রেপ্তারকৃত সালাম বিশ্বাস পাংশা উপজেলার মৈত্রীডাঙ্গী গ্রামের ইমারত বিশ্বাসের ছেলে।

রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় র‌্যাব-১০ একটি আভিযানিক দল গোয়ান্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার পূর্ব বাগদুল এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে।

জানা গেছে, পাংশা মৈশালা (পালপাড়া) গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী মিঠুন পালের সাথে গত ৬ বছর আগে দীপা রানী পালের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে পাঁচ বছর বয়সী যমজ দুইটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল। কিছুদিন ধরে দীপা স্বামীর বাড়ির পাশের এলাকার গাড়ি চালক সাগর খানের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ১১ জুন রাত সাড়ে ৯টা দিকে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় গৃহবধু দীপা রানী পাল। দীপার স্বামী মিঠুন পাল ও শাশুড়ি সাধনা রানী বাড়ির বাইরে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। ঘণ্টা দুই পরে মোঃ সালাম, মোঃ মাসুদ ও মোঃ শাহাদাত নামের তিন যুবক রাস্তা থেকে মিঠুন পালকে ডাকতে থাকে। মিঠুন স্ত্রী দীপাকে খুঁজতে বের হয়, সে সময় বাড়ি ছিল না। শাশুড়ি সাধনা রানী তাদের বলেন, মিঠুন বাড়ি নেই। এ সময় ওই তিন যুবক তার কাছে বৌমা কোথায় জানতে চাইলে তিনি (শাশুড়ি) জানালা বন্ধ করে দেন। মিঠুন বিভিন্ন জায়গায় স্ত্রীকে (দীপা) না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। রাত ১টার দিকে একটা ফোন নাম্বার থেকে মিঠুনকে কল করে টাকা দাবি করেন।  পরদিন গত ১২ জুন ভোরে তিন যুবক দীপা রানী পালকে বাড়িতে রেখে যায়। এর কয়েক ঘণ্টা পর ঘরের সিলিংয়ের হুকের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এ ঘটনার দুইদিন পরে গত ১৩ জুন সন্ধ্যায় দীপা রানীর পিতা বাদি হয়ে পাংশা মডেল থানার মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলে মোঃ সাগর খান, মোঃ সালাম, মোঃ মাসুদ ও মোঃ শাহাদাতের নাম উল্লেখসহ ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ অধিনায়কের পক্ষে সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হাসান সরদার বলেন, মামলার বিষয়টি জানতে পেরে আসামী সালাম বিশ্বাস সহ অন্যান্য আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আত্মহত্যা প্ররোচনায় জড়িত আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে অধিনায়ক, র‌্যাব-১০, ঢাকা বরাবর একটি অধিযাচনপত্র প্রেরণ করেন। অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল আসামীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় পূর্ব বাগদুল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলার আসামী সালাম বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে পাংশা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।