পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করে,হত্যাকান্ডের পর ঘাতক ওবায়দুল হক বাদল খান (৪৫) পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (৫ মে) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার ধাওয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন,উপজেলার ধাওয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ফরিদা বেগম (৬৫) ও তার মেয়ে চম্পা বেগম ৩৫। অভিযুক্ত ঘাতক ওবায়দুল হক বাদল একই এলাকার মৃত : আজিজ খানের ছেলে। ধাওয়া বাজারে বাদলের একটি চায়ের দোকান রয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,বাদল খানের সাথে চাচাতো বোন চম্পা বেগমের ১৬ এপ্রিল মাএ তিন সপ্তাহ আগে বিয়ে হয়,বিয়ের পর থেকে চম্পাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো বাদল। ঘাতক বাদল এর আগে আরও তিনটি বিয়ে করেছেন,চম্পা বেগম তার চতুর্থ স্ত্রী। বাদলের নির্যাতনে আগের তিনজন স্ত্রী বাদলকে ছেড়ে চলে যায়। স্ত্রী চম্পা,শাশুড়ি ফরিদা ও দ্বিতীয় স্ত্রীর শিশু পুত্র ইয়াসিনকে নিয়ে বাদল একটি বাড়িতে বসবাস করে।
নিহত ফরিদা বেগমের বড় মেয়ে খাদিজা বেগম জানান, চাচাতো ভাই বাদলের সাথে তার বোন চম্পার বিয়ে হয়,বিয়ের পর থেকে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ ও শারীরিক নির্যাতন। সোমবার রাতে মা মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় ঘরে থাকা বাদলের দ্বিতীয় স্ত্রীর শিশু সন্তান ইয়াসিন ঘর থেকে পালিয়ে পাশের বাড়ির লোকজনকে জানালে তারা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
চম্পার মামাতো বোন ও প্রতিবেশী নাসিমা বেগম জানান,বাদলের অবুজ ছেলে ইয়াসিন ঘর থেকে পালিয়ে এসে ঘটনাটি আমাদের জানালে আমরা ঘরের মধ্যে ০২জনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই,এ সময় তাদের শরীরে আগুন জ্বলছিল,টয়লেটের পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলি কিন্তু কি কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারিনা,নিহতদের পাশ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা ও কুঠাল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ডিবি,সিআইডি সহ পুলিশের একাধিক টিম রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। ঘটনার পর থেকে বাদলের শিশু সন্তান ইয়াসিনকে পাওয়া যাচ্ছে না,তাকে পাওয়া গেলে রহস্য উদঘাটন অনেকটা সহজ হতো বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
ভান্ডারিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমদ আনওয়ার বলেন,পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে,তবে অভিযুক্ত ঘাতক বাদলকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পিরোজপুর পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের জানান, ভান্ডারিয়ায় মা মেয়ে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। আসামিকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি,তাকে আটক করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।