কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এলাকায় র্যাব পরিচয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে এক বরখাস্ত সেনাসদস্যসহ একাধিক সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র্যাব। অপহরণের ৭২ ঘণ্টা পর গহীন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকালে দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও র্যাবের ইউনিফর্মসহ একটি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়।
গত ১১ জুন ২০২৫, বুধবার রাত ১১টার দিকে ক্যাম্প-১৫'তে বসবাসরত মোঃ হাফিজ উল্লাহ (পিতা: মোঃ রহিমুল্লাহ) কে নিজ ঘর থেকে ডেকে অপহরণ করে তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এরা হচ্ছেন—বরখাস্ত সৈনিক সুমন, সন্ত্রাসী রাকিব ও সন্ত্রাসী শিকদার। অপহরণের পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেন।
তারা র্যাব পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে রঙ্গিখালী এলাকার গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায় এবং তার পরিবারের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একইসাথে হুমকি দেওয়া হয়— প্রশাসনের কাছে গেলে হাফিজ উল্লাহকে হত্যা করা হবে।
সংবাদ পাওয়ার পরপরই র্যাব-১৫ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এবং ভিকটিম পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখে। গত শুক্রবার বিকেলে চিহ্নিত ডাকাত সর্দার শাহআলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন আফ্রিদি ও আব্দুল গফুরকে আটক করে র্যাব।
পরদিন মরিচা বাজার থেকে মূল অপহরণকারী বরখাস্ত সেনাসদস্য মোঃ সুমন মুন্সি-কে গ্রেফতার করা হয়।
অপহৃত হাফিজ উল্লাহকে মুক্ত করার জন্য আজ সকালেই র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বন বিভাগ মিলে মোট ২৫৬ সদস্যের একটি শক্তিশালী যৌথ বাহিনী নিয়ে রঙ্গিখালীর গহীন অরণ্যে অভিযান পরিচালনা করে। দীর্ঘ তল্লাশি শেষে ভিকটিমকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৩ রাউন্ড গুলি, র্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।



ঠিকানা: গ্রাম-ডুমরাকান্দি, পোস্ট-রাজপাট, থানা-কাশিয়ানি, জেলা-গোপালগঞ্জ
মামলা: বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে
গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীকে আইনি প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে। একইসাথে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অপহরণকারী ও সহযোগীদের ধরতে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, রঙ্গিখালীর মতো গহীন পাহাড়ি এলাকাকে অপরাধমুক্ত রাখতে যৌথ বাহিনীর অভিযান নিয়মিত চালানো হবে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
পরিশিষ্ট: এই ঘটনায় প্রমাণিত হলো— অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক, নিরাপত্তা বাহিনীর সুশৃঙ্খল ও গোয়েন্দা সমন্বিত অভিযানে তাদের পরিণতি অনিবার্য।