ঈদ সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে আগুন আর লোহার সঙ্গেই দিনরাত সময় কাটছে কামারদের। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। এক কথায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। লোহাকে উত্তপ্ত আগুনে পুড়ে লাল করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নানা শৈল্পিক রূপ দিচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানের কামারপট্টির কামার শিল্পীরা।
কোরবানি পশুর মাংস কাটায় ব্যবহৃত দা, ছুরি, চাপাতি, বটিসহ নানা সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। সবমিলিয়ে জেলার কামার পল্লীতে এখন কর্মচাঞ্চল্য বিরাজ করছে।
জেলা সদরের মুক্তারপুর, রিকাবিবাজার, চিতলিয়াবাজার, বাংলাবাজার, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মুন্সীরহাট ও শহরের বড় বাজারের কামারপট্টি ঘুরে দেখা যায়, কোরবানি পশু জবাইয়ের বিভিন্ন রকম সরঞ্জামে সেজেছে দোকানগুলো। কঠিন খাটুনির মাধ্যমে জিনিসপত্র তৈরিতে একটানা কাজ করে যাচ্ছেন কামাররা।
মূল কারিগর আগুনের চুলায় লোহা গরমে ব্যস্ত। অন্যান্য সহযোগীদের কেউ লোহাকে পিটিয়ে আকৃতি পরিবর্তন করছেন, কেউ রেত দিয়ে ধারালো করছেন।
শুধু নতুন জিনিসপত্র তৈরি নয় পুরাতন দা, ছুরি, বটিও শাঁন দিচ্ছেন কামাররা। এরইমধ্যে কেউ আসছেন পশু জবাইয়ের নতুন ছুরি বানাতে, কেউ পুরাতন সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন শাঁন দিবে বলে। তবে নতুন কাজের চেয়ে পুরাতন কাজই বেশি বলে জানান কামাররা।
মুন্সীরহাটে সুরঞ্জন কর্মকার (৫০) বলেন, আমাদের এ বাজারে ১০ টি দোকান রয়েছে। এ কাজ খুবই পরিশ্রমের। প্রতিটি ছুরি বানাতে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগে। লোহা ভেদে দাম নির্ধারণ করা হয়। সবচেয়ে বেশি দামের ছুরি স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে। লোহার খন্ডকে আগুনে গরম করে পানিতে ঠান্ডা করা হয়। এরপর হাতুড়ি পেটা শুরু।
তিনি আরও বলেন, বছরের এই মৌসুমে আমাদের ব্যবসার সময়। সারা বছর তেমন কোন কাজ থাকে না। কোরবানির ঈদ আসলে আমরা আমাদের কাজের মাঝে ঈদের আনন্দ পাই।