কলেজ ছাত্র জিদনী (১৮) হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের বিচারের দাবিতে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। স্বজনদের অভিযোগ, মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
রবিবার (১৫ জুন ) দুপুরে কটিয়াদী উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, দশদিন পার হলেও মামলার অভিযুক্ত চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। যদিও ঘটনার পর দিন নিহত জিদনি মিয়ার বড় বোন ময়না আক্তার ফয়সাল (১৯), রতন মিয়া (১৯),সবুজ মিয়া (৪৫),আরিফ মিয়া (১৯),নয়ন মিয়া (২০), রাজু মিয়া (১৯)উনামিয়া (৪০),নুরু মিয়া( ৫০) রাকিব মিয়া (২০) কে প্রধান আসামি করে আরও অজ্ঞাত ১০/১২জনের বিরুদ্ধে কটিয়াদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলানং ০৫ (০৬/০৪/২০২৫),ধারা১৪৩/৩২৫
/৩২৬/৩০১/৩০২/১১৪/৩৬.
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আসামি গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে—এ তথ্য সঠিক নয়। হত্যার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে আসামিদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (০৪ জুন ) পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রবাসীর ছোট ভাই কটিয়াদী সরকারি কলেজের ছাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. জিদনী মিয়াকে (১৮) প্রতিপক্ষ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ( ০৫ জুন) সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিহত জিদনি পৌর এলাকার ভরারদিয়া গ্রামের মৃত ধলু মিয়ার ছোট ছেলে।
নিহতের পরিবারের দাবি, ০৪ জুন (বুধবার) দিবাগত রাতে জিদনী তার বাড়ির পাশে আল্লাদু পাগলার আস্তানার পাশে চায়ের দোকানে বসে চা পান করার সময় ফয়সালের সঙ্গী তাকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে বাড়ির অদূরে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফয়সাল কতক সঙ্গী নিয়ে অপেক্ষা করে। জিদনী সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম করে দুর্বত্তরা পালিয়ে যায়। জিদনীকে উদ্ধার করে প্রথমে বাজিতপুর বেসরকারী হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায়ে পুনরায় বাজিতপুর বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় অবস্থার অবনতি ঘটে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন ময়না আক্তার বাদী হয়ে ফয়সালসহ ৯ জনকে এজাহার নামীয় এবং ১০/১২ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।