২৫০ শয্যার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. কালিপদ সরকার কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে লালমনিরহাটে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে এক ডিএমএফ পাস যুবককে তার স্থলাভিষিক্ত করে রেখে যান।
এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে শ্বাসকষ্টে ভোগা জামাল বাদশাহ (৫৫) নামের এক রোগী অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকলেও যথাযথ চিকিৎসা মেলেনি। পরিবারের অভিযোগ, রুগীর অবস্থা গুরুতর হলেও ভাড়াটে ডিএমএফ প্রথমে তাকে দেখতে আসেননি। পরে স্বজনরা জোর করে ডেকে আনলে তিনি দায়সারাভাবে দেখেন, কিন্তু ততক্ষণে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
রোগীর মৃত্যুর পর ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালে হট্টগোল করলে, দায়িত্বে নিয়োজিত এমবিবিএস চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং ডিএমএফ রুবেল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ছুটে আসেন ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. নাজমুল ইসলাম। গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে নিজের স্থলে একজন অনিয়মিত ডিএমএফ পাস ছেলেকে রেখে ব্যক্তিগত কাজে লালমনিরহাটে চলে যান, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত জামাল বাদশাহ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার ভাগ্নে একরামুল হাসান বলেন, “আমরা সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে এসেও চিকিৎসকের দেখা পাইনি। একটা মানুষকে চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলা হলো। আমরা এর বিচার চাই।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এমবিবিএস চিকিৎসকের পরিবর্তে টাকা দিয়ে ডিএমএফ পাস ছাত্র দিয়ে শিফট চালানো হচ্ছে। এর ফলে চিকিৎসার মান প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি রোগীর মৃত্যু ঘটছে অবহেলায়।