কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মাধ্যমিক ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষকরা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মাধ্যমিক ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষকরা। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকী না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানে নিজেদের ইচ্ছামত ক্লাশ শুরু ও শিক্ষার্থীদের ছুটি প্রদান করা হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়-৩৫টি, মাদ্রাসা-১৯টি, টেকনিক্যাল কলেজ ৬টি এবং কলেজ রয়েছে ৫টি। নিয়মিত তদারকি না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হচ্ছে।

এদিকে প্রায় ৬ মাস আগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বদলী নিয়ে অন্য উপজেলায় চলে যান। তার আগে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ হোসেন বদলী নেন।

পার্শ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি কোন সপ্তাহে ১ দিন আসেন আবার কোন সপ্তাহে আসেন না।

উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও তিলাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় এবং বিদ্যালয় গুলো নিয়মিত পরিদর্শন না করায় উপজেলার মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা মুখথুবড়ে পড়েছে।

তিনি বরেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামান্য কাজের জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের মাসে কমপক্ষে ১০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের নিয়ম থাকলেও আমার বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ বছর থেকে কোনো পরিদর্শন হয়নি। নিয়মিত পরিদর্শন না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান ২/৩টার মধ্যে ছুটি হয়ে যাচ্ছে।

সোনাহাট কলেজের অধ্যক্ষ ও সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদের সভাপতি বাবুল আক্তার জানান, এক কথায় বলা যায় মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংশের দার প্রান্তে। এজন্য তিনি দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানান।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সাইফুর রহমান জানান, অফিসার না থাকায় তাকেই অফিসের সকল কাজকর্ম করতে হয়। অফিসের কাজকর্ম করে বিদ্যালয় পরিদর্শন সম্ভব হয় না। অফিসে কোন যানবাহন নেই, যাতায়তের কোন ভাতা নেই, বেতনও নিয়মিত পাই না। তাহলে এতগুলো প্রতিষ্ঠান কিভাবে তদারকী করা সম্ভব? এ প্রশ্ন করেন তিনি।

নাগেশ্বরী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, আমি বড় একটি উপজেলার দায়িত্বে রয়েছি। ওই দায়িত্ব পালন করে প্রতিদিন এখানে আসা সম্ভব নয়। একাডেমিক সুপারভাইজারের দ্বারা গুরত্বপূর্ণ কাজ গুলো করে নেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় ওই দপ্তরের আমি কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না। জেলায় বারবার বলার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলমের সাথে বারবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।