গত ১৩ মার্চ ফাস্ট নিউজ নামের একটি অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত খুলনার ঐতিহ্যবাহী স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিলড্রেন'স ভয়েস স্কুল এবং স্কুলের অধ্যক্ষ সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট,কাল্পনিক,মনগড়া, ভিত্তিহীন প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি মোঃ জাহাঙ্গীর ইসলাম প্রধান শিক্ষক, চিলড্রেন ভয়েস স্কুল - প্রকাশিত ভিত্তিহীন সংবাদের প্রতিবাদে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করছি।
সরকারি বই গ্রহণ ও বিতরণ:
সরকারি বই আমরা শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষা অফিস থেকে পেয়ে থাকি। এখানে কোন স্কুলেই অতিরিক্ত বই দেওয়া হয় না।শিক্ষার্থীদের বিতরণের পরে যদি দুই এক সেট বই থেকে থাকে তবে আমরা তা পরবর্তী বছরের সাথে সমন্বয় করি।
সরকারি বই বাংলাদেশে সকল শিক্ষার্থীদের কে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়, অনেক সময় শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুলে এসে বই বিতরণ করে থাকেন । সরকারি বই দিয়ে টাকা নেওয়ার মিথ্যা তথ্য একেবারেই হাস্যকর। কোচিংয়ে সরকারি বই বিতরণের যে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে তা একেবারেই ভিত্তিহীন কারণ প্রত্যেক সরকারি স্কুলেই শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বই পেয়ে থাকে, তারা কোচিং থেকে বই সংগ্রহ করবে কেন? এখানে যে সকল শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সহায়তা নিতে আসে তারা সরকারি স্কুল থেকে বিনা মূল্যে বই পেয়ে থাকে।
চিলড্রেন'স স্কুলের ক্লাস চলে প্লে গ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। প্রাথমিকের বেতন ৯০০ টাকা এবং মাধ্যমিকের বেতন ১০০০ টাকা। খুলনা শহরে অনেক মাদ্রাসা আছে যাদের টিউশন ফিস ২৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।
শিক্ষক শিক্ষিকার বেতন: ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১৭০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য আমাদের ২০ জন শিক্ষক রয়েছে । এখানে কারো কারো বেতন ১৫ হাজার ২০ হাজার টাকা। শ্রেণি শিক্ষিকাদের বেতন পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা। আমাদের সাধ্যমত আমরা শিক্ষক শিক্ষিকাদের সম্মানি দিয়ে থাকি ।
বিদ্যালয় এর পাঠদান অনুমতি: আমাদের বিদ্যালয় প্রাথমিকের অনুমোদন রয়েছে। মাধ্যমিকের জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রথম পর্যায়ের অনুমোদন রয়েছে যা যশোর বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। যার স্মারক নাম্বার ৩৭০০০০০০৭৩৩৩০০৬১২-১২ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য যশোর বোর্ড থেকে স্কুল ভিজিট সম্পন্ন হয়েছে, অনুমোদনের বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন। কোন স্কুলের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন থাকলে সেই স্কুল অন্য স্কুলের মাধ্যমে সরকারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।সরকারি আইন অনুযায়ি আমরা খুলনা টেক্সটাইল মিলস হাই স্কুল থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ জে.এস. সি ও এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়া আসছি। এবং আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্র খুলনা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।
শিক্ষকদের চাকরিতে নিয়োগ বাণিজ্য:
আমরা সবসময় সরকারের নিয়ম অনুযায়ি খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকি এবং শিক্ষক শিক্ষিকারা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগ বোর্ডে কমপক্ষে তিনজন অভিজ্ঞ শিক্ষক থাকেন। কোন শিক্ষক শিক্ষিকার মূল সার্টিফিকেট জমা রাখা হয় না ।শুধুমাত্র সার্টিফিকেটের ফটোকপি জমা রাখা হয়। নিয়োগপত্র আটকে রেখে টাকা নেওয়ার বিষয়টি হাস্যকর। আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় একজন পি.এইচ.ডি গবেষক ও দুইজন কুয়েটের এম.এস করা শিক্ষক রয়েছেন। এখানে প্রত্যেক শিক্ষক এতই গুণী যে তাদেরকে উপযুক্ত সম্মানী দিয়ে বিনয়ের সাথে বিদ্যালয়ে কাজ করানো হয়। যে কোন শিক্ষক শিক্ষিকা দের সাথে আলাপ করলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। কোন শিক্ষিকাকে কখনো কোন প্রকার যৌন হয়রানির মত ঘৃণিত অপরাধ স্কুলে ঘটেনি। তবে কোন কোন শিক্ষককে বাদ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার পেছনে যৌতিক কারণ রয়েছে । যেমন একজন শিক্ষিকার জাল সার্টিফিকেট প্রমাণিত হলে তাকে বাদ দেয়া হয়। একজন শিক্ষক ( পুরুষ) স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ করলে তাকে বাদ দেওয়া হয়।২০১৮ সালে পি.ই.সি ও জে.এস.সি পরীক্ষা বৃত্তি পরীক্ষায় চিলড্রেন ভয়েস স্কুল ও শিক্ষা সহায়ক কর্মসূচির আওতায় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে পি.ই.সিতে ৪৫ জন বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত হন এবং জে.এস.সি তে ২৮ জন বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়। এস.এস.সিতে ১০ বছর যাবৎ কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ফেল করে নাই এবং প্রায় ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়ে থাকে।
পরিশেষে অত্যন্ত দ্ব্যার্থহীন কন্ঠে বলতে চাই যে, চিলড্রেন'স ভয়েস স্কুল কোন অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে কখনো জড়িত হয়নি।একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিদ্যালয়ের জনপ্রিয়তা এবং মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবার কারনে ঈর্ষান্বিত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। আমরা এহেন গর্হিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গকে অনুরোধ করছি।