গণ অধিকার পরিষদের শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-ভেদরগঞ্জ-সখিপুর) আসনের প্রার্থী আক্তারুজ্জামান সম্রাট মাঝি সাম্প্রতিক তারাবুনিয়ায় মাঝি পরিবারের এক সামাজিক অনুষ্ঠানে বিএনপি দলীয় এক প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
দলীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর পক্ষে এমন আহ্বান সংগঠনের নীতির পরিপন্থী। এতে নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়ছে বলে দাবি তাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় নেতা বলেন, “আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য। অথচ জনসম্মুখে অন্য দলের প্রার্থীর জন্য ভোট চাইলে সেটা কষ্টদায়ক।”
শরীয়তপুর জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মোতালেব দেওয়ান হান্নান বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তা আমি প্রত্যাক্ষান করলাম, শরীয়তপুর ২ আসনের প্রার্থী হউক তা আমি চাই না যেকোন সময় অন্য দলের সাথে আতাত করে দলের সাথে পল্টি দিতে পারে এতে দলের নেতা কমীরা যে কোন সময় বিপদে পড়তে পারে”
শরীয়তপুর জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি শাহাজালাল সাজু বলেন, “তার বক্তব্যের পর দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি অবগত আছেন, তবে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমরা।”
গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক সোহেল মৃধা জানান, “দলের সাংগঠনিক নীতির বিরোধী এই বক্তব্য। কয়েকজন তার পক্ষে থাকলেও এই বক্তব্যের পর তাকে কেউ সমর্থন করে না। ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদককে এ বিষয়ে জানিয়েছি। এখনও সাংগঠনিক প্রতিক্রিয়া জানায় নি, তবে হয়ত ব্যবস্থা নিবে। এই বক্তব্যের পরে দলের প্রার্থী দাবী করার কোন ইখতিয়ার নেই।”
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলার ছাত্র অধিকার পরিষদের জীবন আহমেদ নান্টু বলেন, সম্রাট বলেছেন এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, কিন্তু এমন ঘটনা দল সমর্থন করে না এমন বক্ত্যবের নিদ্ধা জানাই।
এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের শরীয়তপুর-২ আসনের প্রার্থী আক্তারুজ্জামান সম্রাট মাঝি বলেন, “আমার একটি বক্তব্য কাটছাঁট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে একটি মহল আমাকে হেয় ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।”
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকেই বিষয়টিকে দলীয় ঐক্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ সম্রাট মাঝির বক্তব্যের ন্যায়সঙ্গত ব্যাখ্যা চাচ্ছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে এমন বিতর্ক দলের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলতে পারে এবং বিরোধী পক্ষ এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। তাই দলীয় শীর্ষ নেতাদের দ্রুত সুসংগত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন তারা।