গ্রীষ্মকাল মানেই রঙিন ফলের সমারোহ। এর মধ্যে একটি কম আলোচিত কিন্তু অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল হচ্ছে জাম। গাঢ় বেগুনি রঙের এই ফলটি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এর রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত জাম খেলে ডায়াবেটিস, হজমের সমস্যা এবং ত্বকের নানা সমস্যাও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাম ফলের মধ্যে রয়েছে জামবোলিন ও জ্যামোসিন নামক দুটি উপাদান, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধ।
এছাড়াও জামে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আয়রন ও ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সহায়ক। পাশাপাশি এটি রক্ত পরিশোধনে ভূমিকা রাখে এবং হজম শক্তি উন্নত করে।
স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী হৃদয় মাঝি বলেন, “এই মৌসুমে জাম খুব ভালো হয়েছে। অনেকে নিয়মিত জাম কিনছেন,১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করছি।
স্থানীয় জাম বিক্রেতা চুন্নু দেওয়ান বলেন, এবার গাছে অনেক জাম হইছে জাম গাছ খুব একটা যত্ন না নিলেও ভালো ফলন দেয়। গত কয়েক বছর ধরে বাজারে চাহিদা বেড়েছে। আগে শুধু খাওয়ার জন্য লাগিয়েছিলাম, এখন তো বিক্রি করেই ভালো আয় হচ্ছে। মানুষ এখন বুঝতে পারছে জাম কতটা উপকারী।”
শুধু ফল নয়, জাম গাছের ছাল ও বিচিও ওষুধি গুণে পরিপূর্ণ। অনেকেই বিচির গুঁড়া খেয়ে থাকেন, যা লিভার ও কিডনির জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
স্থানীয় চিকিৎসক ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক বলছেন, অতিরিক্ত জাম খেলে পেট খারাপ বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিতভাবে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই গরমে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের জন্য জাম হতে পারে সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং কার্যকর সমাধান। তাই বাজারে জাম দেখলেই কিনে ফেলুন—স্বাদেও ভালো, স্বাস্থ্যের জন্যও দুর্দান্ত।