গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন এলাকায় ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন এলাকায় ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২ জুলাই) ভোর সোয়া ৫টার দিকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেপারী বাড়ি রোডের ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাম্মেল হকের মালিকানাধীন সাততলা আবাসিক ভবনের একটি ফ্ল্যাটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন মুক্তা আক্তার (১৯) নামের এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফজরের সময় রান্নাঘরে চুলা জ্বালানোর মুহূর্তে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে মুক্তাদের ভাড়া ফ্ল্যাটে। এতে সাত তলার অন্তত চারটি ইউনিটের দরজা, জানালা ও কাঁচের জানালার গ্লাস চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় নিচের তলারও ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিশেষ করে ৬ষ্ঠ তলায় ভাড়াটিয়া অলিউল্লাহর ফ্ল্যাটের গ্যাস লাইন সংযোগের পাশের ওয়াল ধসে পড়ে।
বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দগ্ধ মুক্তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান।
ঘটনার পরপরই গাজীপুর তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, র‍্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জিএমপি গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রান্নাঘরের গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ভবনের কেয়ারটেকার বাচ্চু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। গ্যাস সংযোগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভবনে গ্যাস লাইনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি ছিল না। এমনকি তিতাসের পক্ষ থেকেও নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি বলে দাবি করেছেন তারা। স্থানীয়রা ভবনের গ্যাস লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগের সুরক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
দগ্ধ ছাত্রী মুক্তা আক্তারের শরীরের একটি বড় অংশ পুড়ে গেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
এই ঘটনা নগরবাসীর মধ্যে গ্যাস নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গৃহস্থালী গ্যাস ব্যবহারে সচেতনতা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব আরও একবার স্পষ্ট হলো এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে। প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও এ বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।