এছাড়াও উপজেলার হাজারীগঞ্জ ও জাহানপুর ইউনিয়নের খেজুরগাছিয়া গ্রামে লঘুচাপের প্রভাবে পানি বেড়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি এখন বিপদ সীমার মধ্যে রয়েছে। এতে খেজুর গাছিয়া বেড়িবাঁধ প্রায় ৯০ ভাগ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশের ঝুঁকিতে আছে। গত তিন দিনের অতি বৃষ্টি ও মেঘনায় জোয়ারের চাপে পাউবো'র বেড়িবাঁধের প্রায় ৩শত ফুট এলাকায় এ ফাটল দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছে দুইটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক গ্রামবাসী।
জানা গেছে, ইতোপুর্বে ঘুর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে ভাঙ্গণ দেখা দিলে সেসময় জরুরী মেরামতের বরাদ্ধ হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ তাৎক্ষণিক জিও ব্যাগ ফেলে ব্যবস্থা নেয়া হলে বাঁধটি এতো দ্রুত ভেঙে যেতো না। এখন পর্যন্ত বাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি না ঢুকলেও আগামী দুই একদিনের মধ্যে এ বাঁধটি সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে।ভেঙে গেলে হু হু করে পানি ঢুকে যাবে এমন মন্তব্য করেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয়রা জানান, দ্রুত সংস্কার না করলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি ভেঙ্গে গ্রামে পানি প্রবেশ করবে। এতে ঝুঁকির মধ্যে থাকবে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড চোখ দেখানো বালির বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে সংস্কার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই বাঁধটিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ টেকসই ব্লক ফেলে রক্ষা করা না হলে লক্ষ লক্ষ বাসিন্দা মেঘনার ভাঙনের শিকার হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও ঠিকাদার যেন সরকারি বরাদ্ধ তছরুপ না করে টেকসই বাঁধ নির্মান করে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান। স্থানীয় যুবদল নেতা হাজি গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত শুক্রবার হটাৎ লঘুচাপের প্রভাবে মেঘনায় পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে বেড়িবাঁধের মাটি ধসে বড় আকারে ফাটল দেখা দেয়। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে জিও শিট দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। শনি ও রবিবার দুইদিন ধরে বেড়িবাঁধটি সংস্কারের কাজ করছে শ্রমিকরা। স্থানীয় হারুন দফাদার জানায়, বাঁধ সংস্কারে বরাদ্ধ কম হওয়ায় টেকসইভাবে এ বাঁধটির কাজের অগ্রগতি কমে গেছে। দেখা দিয়েছে বরাদ্ধ সংকট। বরাদ্দ বাড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে টেকসই প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধ উন্নয়ন বা সংস্কার করা হলে দুইটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ রক্ষা পাবে।
চরফ্যাশন উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জানান, গত জুন মাসে খেজুর গাছিয়া এলাকায় ২৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর জরুরি ভিত্তিতে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। গত শুক্রবারের জোয়ারে বাঁধটির প্রায় ৯০ শতাংশ আবারও ভেঙে যায়। ওইদিন রাতেই উপজেলা প্রশাসনসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুই ঠিকাদারকে বাঁধ নির্মাণ কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সংস্কারের কাজ অব্যাহত রয়েছে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় দুইটি প্যাকেজে কাজ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করা হবে।
