আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার দেড় হাজারের অধিক মানুষ। বৃহস্পতিবার(১লা মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি, যার নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।দুপুরে চারঘাটের নন্দনগাছী স্টেশনে দুটি ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করে উপজেলাবাসী।
এ সময় রাজশাহী ও চিলাহাটির মধ্যে চলাচল করা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেইল ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে কিছু সময়ের জন্য ট্রেনগুলো নন্দনগাছি স্টেশনে থামিয়ে রাখা হয়। পরে প্রায় ১০–১৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রেনগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়।আবার নিজের গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করে ট্রেনগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪-১৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই স্টেশনটির কার্যক্রম। এখানে এখন কোনো কার্যক্রম নেই। লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেন থামে না। পুরো স্টেশনের প্লাটফর্মে ছাউনি আছে। এবং স্টেশনটি চালু করার উদ্দেশ্যে লুফ লাইন সংস্কার করলেও লুফ লাইনে ঢুকেনা ট্রেন অপরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।
বিক্ষোভকারীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে স্টেশন সংস্কার ও আন্তনগর ট্রেন থামানোর দাবি জানান। তাদের দাবি ছিল সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা।
প্রায় শতবর্ষ পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী নন্দনগাছী স্টেশনটি ২০১৫ সালের শেষ দিকে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে কেবল দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।তাও লুফ লাইনে ট্রেন না থামায় যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের ট্রেনে ঝুলে ঝুলে উঠতে হয়।যা অধিক কষ্টসাধ্য।
আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, দ্রুত দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর কর্মসূচি হিসেবে অনিদৃষ্টকালের জন্য রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া বক্তব্যে মোঃ তামিম আহম্মেদ বলেন, “প্রয়োজনে আমরা নিজেরাই বিনা বেতনে কমিটির পক্ষ থেকে জনবল দিয়ে স্টেশন চালু করব, কিন্তু যাত্রাবিরতি চাই।”এছাড়াও তিনি তাদের আন্তঃনগর ট্রেন সমূহের দাবি ও রেলস্টেশন সংস্কার সম্পর্কিত দাবিগুলো তুলে ধরেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভের সভাপতিত্ব করেছেন আন্দোলন কমিটির সভাপতি এবং সরদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম।তিনি বলেন আমার ছেলেদের সাথে আমি সবসময় আছি এবং যখন যেখানে ডাকবে আন্দোলনের জন্য পাশে আছি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাবো উক্ত আন্দোলনে সুশৃংখলভাবে।
বিক্ষোভ চলাকালে সমাপনী বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। তিনি বলেন, রাজশাহীতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে একটা ডেট করে আমরা আলোচনার টেবিলে বসব। যদি আলোচনা ফলপ্রসূ না হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা এই নন্দনগাছি দিয়ে ট্রেন চলতে দেব না। এ ব্যাপারে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। তবে আগেই আমরা আগে আন্দোলনে যাব না। উন্মুক্ত আলোচনা করে আমরা যদি তাদের (রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ) বোঝাব এই এলাকার দেড় লাখ মানুষ কষ্ট করছে ঢাকা- রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য।
জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক নাজমুল হক বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি ও প্রত্যাশার পরও ব্যবস্থা না নেওয়া খুব দুঃখজনক ও হতাশাজনক।
সরদহ রেলস্টেশনের মাস্টার মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, অবরোধের কারণে ট্রেন চলাচলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে এবং বিঘ্ন ঘটেছে। তবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। তবে এখনো বিস্তারিত জানিনা এ সম্পর্কে। এছাড়া সব ট্রেন সময়মতো চলাচল করেছে। বিস্তারিত পরে জানতে পারবে।