তিনি বলেন, “প্রতি কেজি চালের জন্য সরকার ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়ে আসছে। গতবার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সময়ও প্রতি কেজিতে প্রায় ৪ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচের চাপ কিছুটা লাঘব হয়েছে।” বুধবার দুপুরে দিনাজপুর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, সকল জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্য উপদেষ্টা জানান, সার, বীজ ও সেচসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে কৃষকদের উৎপাদন খরচও বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষককে কিছুটা লাভবান করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, “বাজারে চালের দাম সামান্য বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে তা সহনশীল পর্যায়েই রয়েছে।” চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, “আমরা এখন শুধু বাজারে সরবরাহকারী নই, আমরাও সরাসরি ক্রেতা। সরকারের মূল লক্ষ্য হলো চালের বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা।” তিনি আরও জানান, অনেক ব্যবসায়ী চাল আমদানির আবেদন করেছিলেন। বাছাই কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন প্রদান করেছে এবং ইতিমধ্যে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আরও অনুমতি দেওয়া হবে। চালের বহুমুখী ব্যবহার প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “চাল শুধু মানুষই খায় না, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এমনকি মাছও খায়। দেশে বছরে প্রায় ১ কোটি মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত থাকলেও এর বহুমুখী ব্যবহারের কারণে আমদানি করতে হচ্ছে।” লাইসেন্সবিহীনভাবে খাদ্য মজুদকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “খাদ্য মজুদের একটি সময়সীমা ও নির্দিষ্ট পরিমাণ নীতিমালায় উল্লেখ আছে। এর বাইরে কেউ মজুদ করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।” তেতুলিয়ায় ওএমএস চাল আটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তখন সে সময় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু ছিল না। বর্তমানে কর্মসূচি চলমান রয়েছে। তবে যে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তাধীন। খাদ্য কেলেঙ্কারি, মজুদবাজি বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।” চলমান খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির বিষয়ে মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবির।