কুড়িগ্রামের ঢুষমারা থানার দক্ষিণ খাউরিয়া গ্রামে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেনও রয়েছেন। অভিযানে জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।


ঢুষমারা থানার এসআই (নিঃ) প্রদীপ চন্দ্র মহন্ত জানান, ২ আগস্ট রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে মাদক ও জুয়া বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য সরকারি নৌকা যোগে অভিযান শুরু করা হয়। ৩ আগস্ট রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে ভাটিয়ার চর এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ খাউরিয়া গ্রামের আবু বক্করের বসতবাড়ির টিনের ঘরে জুয়ার আসর বসেছে।

এরপর এসআই প্রদীপ চন্দ্র মহন্তের নেতৃত্বে এএসআই মের আউয়াল হোসেন, মোঃ তারা মিয়া, নায়েক মিজানুর রহমান, কনস্টেবল অলি আহম্মেদ, রনজিত কুমার, সৈয়দ রোকনুজ্জামান মিঠু, সুদর্শণ রায় ও মোস্তাফিজুর রহমানসহ পুলিশের একটি দল রাত ২টায় ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ঘরটি ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই পালানোর চেষ্টা করলে ১৪ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নয়ারহাট ইউনিয়নের জামায়াতের সভাপতি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন (২৮), মোঃ আবু বকর (৫২), কোরবান আলী (৪৬), আঃ মালেক (৪০), কাবেল (৪০), শওকত (৪০), আলমগীর (৪০),মহিলার (৪৫), মোনছের আলী (৩৫), জাবেদ আলী (৪০), তারা মিয়া (৩৭), আবু বকর (৪০), মাইনুল (২৭), ও সুমন (২৬)। সকলেই ঢুষমারা থানার বাসিন্দা।

 ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে জুয়া খেলার ৩ সেট তাস ও ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় মোট ৩৯,৯২০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এসআই প্রদীপ চন্দ্র মহন্ত বলেন, "আটককৃতরা স্বীকার করেছে তারা টাকার বিনিময়ে তাস দিয়ে জুয়া খেলছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জুয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।"

ঢুষমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জনাব [ মোঃ মতিয়ার রহমান ] এই বিষয়ে বলেন, “জুয়া, মাদক কিংবা যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ মানুষ যদি সহযোগিতা করে, তবে এসব অপরাধ সমাজ থেকে নির্মূল করা সম্ভব।”

স্থানীয় সচেতন মহল ও গ্রামবাসীরা অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং এ ধরনের সাহসী ও সময়োপযোগী অভিযান পরিচালনার জন্য এসআই প্রদীপ চন্দ্র মহন্ত, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য এবং থানার ওসি সাহেবকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, একজন নির্বাচিত ইউপি সদস্যের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও হতাশাজনক। এলাকাবাসী আশা করছে, এর মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে এবং ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধে জড়ানোর সাহস পাবে না।