কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানে আসামের পাহাড়ী এলাকায় ভারি বর্ষনের কারণে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কুশিয়ারা নদীর তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানে আসামের পাহাড়ী এলাকায় ভারি বর্ষনের কারণে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কুশিয়ারা নদীর তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার ওই তিন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। সৃষ্ট বন্যার কারণে জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ডুবতে শুরু করেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কুশিয়ারার ডাইকে আরও ভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের পাশে কুশিয়ারা নদীর ডাইক দিয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। সোমবার ভোররাতে একই ইউনিয়নের বাখরশাল ও সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামের পাশে কুশিয়ারা নদীল ডাইক ভেঙে যায়। এতে আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে।

এ ছাড়া জকিগঞ্জ পৌর শহরের নিকটবর্তী কেছরী গ্রামের পাশে ডাইকের ওপর দিয়ে শহরে ঢুকছে কুশিয়ারার পানি। মাইজকান্দি গ্রামের কাছে ডাইকের একাংশ ধসে পড়েছে নদীতে। জকিগঞ্জ ইউনিয়নের ছবড়িয়া, সেনাপতিরচক, সুলতানপুর ইউনিয়নের ইছাপুর, খলাছড়া ইউনিয়নের একাধিক স্থান, বারঠাকুরী ইউনিয়নের পিল্লাকান্দি ও আমলশীদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক জায়গায় ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা বালু ও মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে ডাইক রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের প্রায় ১শ ফুট ও বাখরশাল গ্রামে ৪০-৫০ ফুট, খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকার ৩০-৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে পার্শ্ববর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে আশঙ্কাজনকভাবে কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার লোকজনের বসতঘরে ইতোমধ্যে পানি ঢুকে গেছে। রোববার রাত থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া শুরু করেছেন। উপজেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করেছে।

নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজন জানান, কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় জকিগঞ্জে বারবার বন্যা হচ্ছে। রবিবার থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ সেদিকে নজর দেয়নি। নদীর তীর উপচে পানি প্রবেশ বন্ধের জন্য বারবার বস্তার চাহিদা জানানো হলেও সরবরাহ করা হয়নি। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, প্রশাসন সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছে। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে কতটি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেন নি ইউএনও। তবে প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।