বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত নথিপত্রে অনিয়ম, ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং দায়িত্বহীনতার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত নথিপত্রে অনিয়ম, ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং দায়িত্বহীনতার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মো. মনির শেখ, যিনি বর্তমানে একটি বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

ভুক্তভোগী মো. মনির শেখ জানান, তার পিতা মৃত লিয়াকত আলী ১৯৯২ সালে ৬৮২ নম্বর কবলা দলিলের মাধ্যমে মো. মতিয়ার রহমান বিহারা থেকে ফকিরহাট উপজেলার লখপুর এলাকায় ০.০৬৭০ একর জমি ক্রয় করেন। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জমিটিতে বসতবাড়ি, টিনশেড দোকানঘর নির্মাণ করে পরিবারটি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিল।

মনির শেখের ভাষ্য অনুযায়ী, তার পিতা ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি এবং অন্যান্য ওয়ারিশগণ জমিটি ওয়ারিশসূত্রে ভোগ করছেন। কিন্তু সম্প্রতি একটি পক্ষ হঠাৎ করে জমির মালিকানা দাবি করে দখলের চেষ্টা করে। এ অবস্থায় মনির শেখ আদালতের দ্বারস্থ হন।

আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ফকিরহাট উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সাব-রেজিস্ট্রার মো. মহিদুল ইসলাম সরেজমিনে তদন্ত না করেই একটি ভুল তথ্যসংবলিত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন, যা মামলার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, “কোর্ট থেকে তদন্ত চাওয়া হয়েছিল। আমি উভয় পক্ষকে ডেকে ডকুমেন্ট ও তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে রিপোর্ট দিয়েছি।”

তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাব-রেজিস্ট্রারের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও বাস্তবতা বিবর্জিত রিপোর্টের কারণে সাধারণ মানুষ বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকে বলছেন, এটি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—বরং রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরেই নানাবিধ অনিয়ম চলে আসছে।

এদিকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। বিষয়টি ইতোমধ্যে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।