রাজশাহীর বাঘা উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদিপুর বালিকা বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। এ সংঘর্ষে গুরুতর আহত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকসহ ৮ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষককে মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন সহকারী শিক্ষক ও তাদের অনুসারীরা। সে ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং পরে উভয় পক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
আজ বুধবার প্রধান শিক্ষক তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে অফিস কক্ষে বসার চেষ্টা করলে পূর্ব থেকেই অবস্থান নেওয়া সহকারী শিক্ষকপক্ষের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল ব্যবহার হয় এবং দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক, তাঁর ভাই আমানুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন, হক সাহেব, নেক আলমসহ ১০ জন চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদপন্থী শিক্ষক জাকির হোসেন, শিক্ষার্থী সুমাইয়া এবং আকাশ, বজলুর রহমান, মারুফ, রাজু, রুবেল, রাইদুল, জীবন, সম্রাট আলী, সাগর ও রাহাবুলসহ ১৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে আকাশ, রাহাবুল ও রুবেলকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি পুলিশ টিম এবং সেনাবাহিনীর একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরিস্থিতি শান্ত হলে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে ওসি আছাদুজ্জামান বলেন, “আমি নিজে সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করি এবং শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বিষয়টি মীমাংসার আহ্বান জানাই। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”