২০২৪ সালের ২ আগস্ট তার তৈরি করা "একদফা" ডিজাইনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
মারুফ তার নিজস্ব ফেসবুক পেইজ "Dept. Not Flauors" এ প্রকাশ করেন এই পোস্টার, যা দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেটি ৫ হাজারের বেশি শেয়ার এবং লক্ষাধিক ভিউ অর্জন করে। অসংখ্য শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী তাদের প্রোফাইল ছবি হিসেবে সেটি ব্যবহার করতে থাকেন। ডিজাইনটি ছাত্রসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় এক নতুন আত্মবিশ্বাস ও এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন ও সহিংসতা শুরু হয়। শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের উপর গুলি চালানো হয়, ঘটে প্রাণহানিও। সরকার পরবর্তীতে কোটা সংস্কার মেনে নিলেও সেই সময় দেশে ইন্টারনেট শাটডাউন চলায় ঘটনাগুলোর সম্পূর্ণ চিত্র জনসাধারণের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ইন্টারনেট সচল হওয়ার পর বিভিন্ন ভিডিও ও তথ্য সামনে আসে, যাতে দেখা যায় কীভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে। এই প্রেক্ষাপটেই ৯ দফা দাবির জায়গায় আন্দোলনকারীদের মাঝে একদফা—প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ—দাবিটি ঘনীভূত হতে থাকে।
মারুফ বলেন, "প্রথমে এটি ছিল কেবল কোটা সংস্কারের দাবি। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার আমাদের ভাই, বন্ধু, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালিয়েছে। যখন আমরা সত্যিকারের চিত্র দেখি—হেলিকপ্টার থেকে গুলি, র্যাব-পুলিশের সহিংসতা—তখন নয় দফা যথেষ্ট মনে হয়নি। তখনই আমি অনুভব করি একটাই সমাধান: একদফা, খুনি হাসিনার পদত্যাগ।"
এর পরদিন, ৩ আগস্ট ২০২৪, শনিবার বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শুরু হওয়া একটি প্রতীকী প্রতিবাদ বাস্তব আন্দোলনে রূপ নেয়, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করে।