ভোলার চরফ্যাশনের কুলসুমবাগ দরবারের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বঘোষিত “প্রফেসর” আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে বহুবছরের অপরাধ সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করেছে

ভোলার চরফ্যাশনের কুলসুমবাগ দরবারের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বঘোষিত “প্রফেসর” আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে বহুবছরের অপরাধ সাম্রাজ্য ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে মজিদ নিজেকে “জমিনের রব” হিসেবে দাবি করে ধর্মের অপব্যবহার, নারী নিপীড়ন, মানসিক নিপীড়ন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাম্রাজ্য কায়েম করেছিলেন। তাছাড়া একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে তিনি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন।

### প্রধান অভিযোগসমূহ:

🔹 **বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতন:** ১১ থেকে ২৪ বছর বয়সী অন্তত ১১টি বিয়ে করে নারীদের মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন।
🔹 **ধর্মীয় প্রতারণা:** নিজেকে “খোদার প্রতিনিধি” পরিচয় দিয়ে ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে হাজার হাজার পরিবারকে আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিঃস্ব করে দেন।
🔹 **সন্ত্রাসী কার্যকলাপ:** নরসিংদীর আলোচিত মেয়র লোকমান হত্যা মামলার আসামিদের আশ্রয়দান এবং সন্ত্রাসীদের সাথে ভিডিও ও অডিও কলে সরাসরি নির্দেশনা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।
🔹 **রাজনৈতিক আশ্রয়:** স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদ ও আর্থিক সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।

### চরফ্যাশন থানার ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, চরফ্যাশন থানার ওসি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একধরনের নীরবতা পালন করছেন। টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এতদিন মজিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।

### মানবিক দিক:

মজিদের নিপীড়নের শিকার অনেক নারী ও তাদের পরিবার এখনও আতঙ্কিত। তারা জানিয়েছেন, “মজিদ আমাদের জীবন ধ্বংস করেছে। আমরা শুধু নিরাপত্তা চাই।” অন্যদিকে, কিছু পরিবার মজিদের ভয়ে এখনো থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে সাহস পাচ্ছে না।

### চূড়ান্ত সময়সীমা:

ছাত্রসমাজ, ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং সাধারণ এলাকাবাসী ঘোষণা দিয়েছে—আগামীকালের মধ্যে মজিদকে গ্রেফতার করা না হলে পরদিন চরফ্যাশন থানা ঘেরাও করে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করা হবে।

### দাবিসমূহ:

১️⃣ মজিদকে দ্রুত গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
২️⃣ তার সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক মদদদাতাদের—including এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম—আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩️⃣ ভুক্তভোগী নারীদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪️⃣ কুলসুমবাগ দরবার স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।
৫️⃣ চরফ্যাশন থানার ওসির ভূমিকা তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।