জেলেদের খাদ্য সহয়তা না দিয়েই শুরু হয়েছে মনপুরার মেঘনায় মাছ শিকারে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা। আয় রোজগার না থাকায় রমজানের বাজার করতে পারেন নি অনেক জেলে পরিবার। এমন অবস্থায় চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটছে মনপুরার মেঘনা নদীতে মাছ শিকারী হাজার হাজার জেলের। নদীতে মাছ শিকার বন্ধ। তাই বেকার সময়ে কেউ নতুন জাল বুনছেন, আবার কেউ ছেড়া জাল জোড়া লাগাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ট্রলার মেরামত করছেন। মাছ ধরায় নিশেধাজ্ঞা থাকায় এভাবেই বেকার সময় পার করছেন মনপুরার মেঘনা পাড়ের জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে খাদ্য সহায়তা হিসেবে নিবন্ধিত প্রতি জেলেকে চার মাসের জন্য ৪০ কেজি করে ১৬০ কেজি চাল দেয়ার কথা। কিন্তু খাদ্য সহায়তার চাল না দিয়েই পহেলা মার্চ থেকে শুরু হলো নিষেধাজ্ঞা। তাই রমজানের শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কার কবলে পরতে হলো বেকার জেলে পরিবারগুলোর । অনেকেই রমজানের বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছেন। চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন জেলেদের পরিবার । মনপুরার হাজীরহাট ঘাটের মেঘনা পারের জেলে লোকমান মাঝিসহ ওখান কার জেলেদের সাথে কথা বলে জানাযায়। তারা জানায়, নদীতে বেশ কিছু দিন জালে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। আশায় আছিলাম সরকারি খাদ্য সহায়তা শুরুতেই পাব তা দিয়ে আমাগো পরিবারনিয়ে রমজান মাসটা ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারব। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন আশাই আমাগো পূরণ অয়নাই । না পেলাম মাছ না পেলাম এখন পর্যন্ত সরকারি সহয়তা কিভাবে এখন বাজার সদায় করবো। আশা ছিল রোজার মাসটা কোন রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই ইবাদাতে কাটিয়ে দিব। যে অবস্থা দেখি তাতে আমগো না খেয়ে রোজার মাস কাটাতে হবে। জেলে মো: আনসার, নুরহোসেন, রফিজল জানান, আমারা অনেক জেলে এখানে আছি নিবন্ধনের বাইরে। আমাদের জেলে কার্ড হবে বলে নাম দিয়েছি প্রায় দু’বছরের কাছাকাছি সময় হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাইনি। মৎস্য বিভাগের কাছে আমরা জোর দাবি করছি আমাদের ব্যবস্থা আপনারা দ্রুত করুন। জেলেরা আরও জানান, বছরের তিন-চার বার নিষেধাজ্ঞা থাকে মাছ শিকারের ওপর। এসময় সরকারের পক্ষ থেকে বেকার জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা বরাদ্ধ থাকলেও প্রতি বছরই তা বিতরণ করা হয় শেষ দিকে। নিষেধাজ্ঞা শেষে চাল পেলে তা দিয়ে কষ্ট লাগব হয় না জেলেদের। তাই এবার দ্রুত সময়ের মধ্যে চাল বিতরণের জন্য নতুন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। মনপুরার মৎস্য কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মনপুরার মেঘনার অভায়াশ্রমে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের জন্য সবধরণের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন সরকার। যারা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে তাদেরকে চার ধাপে ১৬০ কেজি চাল দেয়া হবে। নতুন একহাজার পাঁচশত জেলেদের নিবন্ধন করে জেলে তালিকায় আনা হয়েছে । তিনি আরো জানান মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বনিক না থাকায় জেলেদের চাউল বরাদ্দ করতে পারিনাই। আজকে ইউএনও স্যার আসছে তাই অজকে জেলেদের চাউল বরাদ্দ করানোর চেষ্টা করবো । এর মধ্যে মনপুরা উপজেলার ডালচর থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত, মেঘনা নদীর ১৮ কিলোমিটার এলাকাকে অভায়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে । মনপুরার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৪৪৩৪ জন। এর বাইরেও মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার অর্ধলাখ জেলে। বছরের পর বছর এই পেশায় কাজ করেও এখনো নিবন্ধনের আওতায় আসেননি অনেকে। তাই তাদের ভাগ্যে জুটেনা সরকারি কোন সহায়তাও।