ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালি সোহেল মিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে জরুরি বিভাগে রোগীর ড্রেসিং, সেলাইসহ নানা কাজও করে থাকেন তিনি।
সম্প্রতি আখাউড়া পৌর এলাকার বাসিন্দা হেলাল মিয়া লিখিত অভিযোগে জানান, গত বছরের শেষ দিকে পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি, তার স্ত্রী ও কন্যা আহত হন। এরপর মামলা দায়েরের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিকেল সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে তিনি পড়েন ভোগান্তিতে। হেলাল মিয়ার অভিযোগ, আহতদের জখমের তথ্যসহ দ্রুত এমসি দেওয়ার শর্তে সোহেল মিয়া তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ১০ হাজার টাকায় রফাদফা হয় এবং এক প্রতিবেশীর সামনে সেই টাকা পরিশোধ করেন হেলাল। কিন্তু সময়মতো সঠিক তথ্যসহ এমসি না দেওয়ায় টাকা ফেরত চান তিনি। এ নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও সোহেল মিয়া শুধু আশ্বাস দিয়ে ঘুরিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন হেলাল মিয়া।
অভিযোগ তদন্তে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারি সোহেল মিয়া আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘মালি’ পদে যোগ দেন। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মালির কাজ না করে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবার কাজ করছেন। তার বিরুদ্ধে আগেও এমসি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে হেলাল মিয়া বলেন, আমি সঠিক এমসি না পেয়ে তার কাছে টাকা ফেরত চাই। সে শুধু বলছে দিবো দিবো, কিন্তু দিচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ করেছি, তখন সে আমার বাড়িতে এসে ফেরত দেওয়ার কথা বলেছ।
অভিযুক্ত সোহেল মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারও কাছ থেকে এমসি দেওয়ার জন্য টাকা নেয়নি। তবে জরুরি বিভাগে আহত রোগীদের ড্রেসিং করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, এমসি নিয়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. নোমান বলেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে আমরা একটি তদন্ত টিম গঠন করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।