বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাভারের মুক্তিরমোড় এলাকায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী মানের নেতা কলেজ ছাত্র মিঠু মারুফকে হত্যা মামলায় ডাকাত সর্দার লেগুনা আপেলের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে উঠানো হলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ সময় আদালতের কাছে নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে কান্নায় ভেংগে পড়েন আপেল।
ছাত্রশিবির ঢাকা জেলা উত্তর শাখার সাথী মানের নেতা কলেজ ছাত্র মিঠু মারুফ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক অটল বিহারী বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট শিক্ষার্থী মিঠু মারুফ নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় সাভার মডেল থানায় করা হত্যা মামলায় লেগুনা আপেলকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
পুলিশ রিমান্ডে থাকা আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেল সাভার পৌরসভার ভাটপাড়া মহল্লার শুকুর মুন্সি ওরফে শুকুর কসাইয়ের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোসহ সাংবাদিকদের হুমকি, মারধর, হত্যাচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া বখাটে আপেল বাবার পেশা কসাই ও লেগুনার ড্রাইভার হিসেবে পেশা শুরু করে পরবর্তীতে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, পাঁচ নারীকে ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে যুক্ত হয়ে একসময় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বনে যান। সে সময় সাভার মডেল থানার নোটিশ বোর্ডে তার ছবির পাশে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দারকে ধরিয়ে দিন লেখা ছিল। বিভিন্ন মামলায় কারাবাস শেষে জামিনে মুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় শুরু করেন কথিত সাংবাদিকতার নামে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি। সবশেষে গেলো জুলাই-আগস্টে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষের ওপর দুর্ধর্ষ হামলা চালিয়েছে। একপর্যায়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলে এলাকা ছেড়ে গাঁ ঢাকা দেয়। পরবর্তীতে তাকে ধরতে মাঠে নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। চলতি বছরের (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সাভার মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে নারায়ণগঞ্জের একটি ভাড়া বাসা থেকে আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যাসহ ২৬টি মামলা রয়েছে।