ঈদের ছুটির পর স্কুলে ফিরে এসেই চরম হতাশায় পড়েছে রংপুরের শিশু ভুবন কিন্ডারগার্ডেন এন্ড স্কুলের শিক্ষার্থীরা। দখল হয়ে গেছে তাদের শ্রেণীকক্ষ। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ, খুলে নেওয়া হয়েছে ফ্যান, এমনকি ভেঙে ফেলা হয়েছে শ্রেণিকক্ষের দেয়ালও।
এঘটনার প্রতিবাদে গতকাল(বুধবার) বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
সুবাহ বিনতে শহীদ নামে চতুর্থ শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন,স্কুলে ফ্যান লাইট নেই।এমনকি ওয়াশরুমে যেতে পারছিনা এছাড়াও শ্রেনীকক্ষ বন্ধ রয়েছে।এতে আমাদের পড়াশুনার ব্যাপক ক্ষতি হতে।দ্রুত এর সমাধান চাই।
সুমাইয়া আক্তার সিমা নামে তৃতীয় শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন,স্কুলে এসে দেখি ক্লাস বন্ধ,পানির লাইন বন্ধ,কারেন্ট নেই তাই ফ্যান চলছে না।আবার কোন কোন ক্লাসরুম ভেঙে ফেলেছে।আমাদের স্কুল দখল করার জন্য ওরা(দখলকারীরা) অনেক চেষ্টা করছে।আমাদের স্কুল আমরা ফেরত চাই।
অভিভাবক হোসনে আরা বলেন,আমার এর আগে দুই বাচ্চা এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে বের হয়ে এখন ভালো জায়গায় পড়াশোনা করছে। এভাবে দখলবাজি কোনমতেই মেনে নেয়া যায় না। আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে যে স্বপ্ন আছে সে স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি অনুরোধ করে বলেন,আমরা এই প্রতিষ্ঠানে বাচ্চাকে ভর্তি করিয়েছি তার যতটুকু লেখাপড়া করা দরকার সে ততটুকু লেখাপড়া করে বের হয় কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই।
শিশুভুবন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা জেসিমা আক্তার মুক্তি মনি বলেন,বছরের মাঝপথে এসে পরীক্ষার জন্য তৈরি হয়েছে সিলেবাস। এমন সময় এই ঘটনায় আমরা আসলে কোথায় যাব। বাচ্চারা কোথায় যাবে। আমরা এর বিচার দাবি করছি।
ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মুশফিকুল আরমাইন বলেন, ভবন মালিকদের সাথে অংশীদারিত্বের একটা বিরোধ চলে আসছে সে কারণে একটি মহল আমাদের ক্লাস রুমগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।ঈদুল আযহার ছুটির পরে স্কুল খুলে দেখি পাঁচটি ক্লাসরুম তালাবদ্ধ । আমরা তো এখন বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে পড়েছি এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রতিষ্ঠান অধ্যক্ষ জানান,ঈদুল আযহার আগে তাদের সঙ্গে বসে ছিলাম। তারা বলেছিলেন প্রতিষ্ঠানের কোন ক্ষতি করবেন না। স্কুল খোলার পরে দেখি বাচ্চাদের প্রবেশ পথ বন্ধ করা হয়েছে। আজকে সে কারণে ক্লাস করানো সম্ভব হয়নি।চলতি বছরের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমি এই স্কুল পরিচালনা করতে চাই তারপরে হয়তো শিক্ষার্থীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া যেতে পারে।সে পর্যন্ত আমাদের সময় দেয়া উচিত ছিল বলে মনে করি।কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এ ঘটনায় আমি সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে বিদ্যালয়ের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়, আতঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখন একটাই প্রশ্ন তুলছেন—শিক্ষার পরিবেশ কোথায়?