ঢাকা কেরানীগঞ্জ বংশাল থানায় রাজশাহী জেলা দুর্গাপুর উপজেলা আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের মেডিকেল রিপ্রেজেন্টটিভ বিপ্লব গাজী (৩৫), কেরানীগঞ্জ ভাড়া বাসায় দুর্বৃত্তদের হামলায় খুন হন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পুলিশ গিয়ে তার ভাড়া বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেন।
নিহত বিপ্লব রাজশাহী জেলা দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার গাজী ( টেলু গাজী) বড় ছেলে। বিগত ৪/৫ বছর ধরে ঢাকা কেরানীগঞ্জে ভাড়া বাসায় চাকরীর সুবাদে একা একা বসবাস করতেন। নিহত বিপ্লব সিসি ফুটেজ অনুযায়ী রবিবার রাত ৯ টার দিকে বাসায় ঢুকেন। পরদিন সোমবার তাহার অফিসে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নিহত বিপ্লব অফিসে না যাওয়ার কারনে বেক্সিমকো ফার্মার অফিস কর্মকর্তারা তাহার মোবাইলে ফোন দেন। নিহত বিপ্লবের মোবাইলে যখন ফোন ঢুকে নাই, তখন বিপ্লবের খোঁজে বেক্সিমকো ফার্মার কর্মকর্তারা তার নিজ গ্রামের বাড়িতে ফোন দেন। তাতেও খোঁজ না মেলায় সোমবার সন্ধ্যায় বিপ্লবের ভাড়া বাসায় গিয়ে, বাসার মালিকের কাছে বিপ্লবের খোঁজ জানতে চান। পরে বাসার মালিকসহ বিপ্লবের ফ্ল্যাটে গিয়ে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। এতে তাদের সন্দেহ হলে স্থানীয় থানায় পুলিশকে তারা খবর দেন। এরপর পুলিশের উপস্থিতিতে ফ্লাটের দরজা ভাঙ্গা হয়, দরজা ভাঙ্গার পর দেখতে পান বিপ্লবের নিথর দেহ পড়ে আছে রুমের মেঝেতে।
নিহত বিপ্লব গাজীর বিষয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ বংশাল মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাব আল হাসান গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিপ্লব নামের ওই যুবককে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সময় বিপ্লবের গলায় ইলেকট্রিক তার পেছানো ছিল এবং মাথা সহ বিভিন্ন শরীরের অংশে কোপানোর দাগ ছিল। বিপ্লব কে খুন করার পর তার পুরো শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা ছিল।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
বিপ্লবের বিষয়ে এলাকাতে খোঁজ নিলে এলাকাবাসী বলেন বিপ্লব ছিল অত্যন্ত নম্র ভদ্র একটি ছেলে কারো সাথে উচ্চস্বরে কোন কথা বলতেন না বিপ্লবের মত একটি ছেলের কোন শত্রু থাকতে পারে না, যে তাকে খুন করতে পারে।
বিপ্লবরা ছিলেন তিন ভাই,তিন ভাইয়ের মধ্যে বিপ্লব ছিল বড়, তাহার দুই ছোট ভাই মিনার এবং নয়ন, তাদের ভাইদের মধ্যে একে অপরকে খুব ভালবাসতেন। মৃত্যু কালে তিনি রেখে গেছেন মা এবং দুই ভাই।
বিপ্লবের ইনকামের উপর চলতো তাদের সংসার। বিপ্লবের মৃত্যুতে আত্মীয় স্বজনদের কান্নায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বিপ্লবের মৃত্যু কোনভাবে মেনে নিতে পারছে না তার আত্মীয়স্বজনরা। লাশ বাসায় আনার পর তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।