নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে লালমোহনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে দিনক্ষণ যোগ করা যাবে) সকাল ১১টায় লালমোহন চৌরাস্তার মোড়ে নাগরিক সেবা সুরক্ষা কমিটির ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষাবিষয়ক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ জনগণ। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন নাগরিক সেবা সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সোহেল আজিজ শাহিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউল্লাহ হাওলাদার, ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাংবাদিক জসিম জনি, সাংবাদিক আজিম উদ্দিন খান, শিক্ষক মাহাবুব আলম এবং শ্রমিক দলের সভাপতি ফোরকানসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে লালমোহনে বিদ্যুৎ সঙ্কট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না। ঘন ঘন লোডশেডিং-এর কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রোগী ও শ্রমজীবী মানুষ এ সমস্যার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিলের অযৌক্তিক খাত সৃষ্টি করে গ্রাহকদের ওপর আর্থিক চাপ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের অনুমতি ছাড়াই কিছু খামখেয়ালী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ডিমান্ড চার্জ, পাওয়ার ফ্যাক্টর (PF) সারচার্জ, মিটার ভাড়া, এবং বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভাজন করে অতিরিক্ত টাকা আদায়। এসব সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, ভোলা জেলার বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে এখানকার নিজস্ব গ্যাস দিয়ে। অথচ এই জেলার মানুষই পর্যাপ্ত ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিগত সরকারের সিদ্ধান্তে ভোলার বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হলেও, স্থানীয় জনগণ সেই বিদ্যুতের সুফল থেকে বঞ্চিত। এটি একধরনের বিদ্যুৎ আগ্রাসন বলেও দাবি করেন বক্তারা।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এখনই যদি লোডশেডিং সমস্যার সমাধান না করা হয় এবং পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তাদের খামখেয়ালী আচরণ বন্ধ না করে, তাহলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও এবং লালমোহনে পল্লী বিদ্যুৎ বাতিল করে পিডিবি (PDB) বাস্তবায়নের দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এ সময় বক্তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, লালমোহন ও ভোলাবাসীর বিদ্যুৎ অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে এর দায় প্রশাসন ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।