মঙ্গলবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে "পোষ্য কোটা" বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন জাবি উপাচার্য। এর আগে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে ২ এবং ৩ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী গণঅনশনে বসেন। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পোষ্য কোটা সংস্কারের প্রস্তাব করলে তা প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায় যা রাত ১টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রার ভবনের তালা দিয়ে কোটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এতে মুখোমুখি অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরইমধ্যে পোষ্য কোটার পক্ষের দাবিতে ৫ দিনের কর্ম বিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দেয় জাবি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। এ ঘটনার পরে দুপুর পৌনে ২টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখেন। পরবর্তীতে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে রাত সোয়া ১২টায় উপাচার্য পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সালে রাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক আব্দুল বারী দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম রাবিতে "পোষ্য কোটা" চালু করেন যা পরবর্তীতে দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে যায়। সম্প্রতি জাবিতে পোষ্য কোটার নামে-বেনামে নানান অপকর্ম এবং অনিয়মের তথ্য সামনে আসতে থাকে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর একে একে দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা যার ধারাবাহিকতায় রাবি, শেকৃবি এবং পবিপ্রবির পর জাবিতে পোষ্য কোটা বন্ধের ঘোষণা দেন জাবি উপাচার্য।