আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় মোট ২১টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় মোট ২১টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১১টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১০টি হাট থাকবে। এসব হাটের মধ্যে গাবতলী ও সারুলিয়া দুটি স্থায়ী হাট, বাকি ১৯টি অস্থায়ী হাট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসব হাট বসানো হবে যাতে নগরবাসী সহজে কোরবানির পশু কিনতে পারেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় গাবতলী ছাড়াও কোরবানির হাট বসবে কাওলা শিয়ালডাঙ্গা, দিয়াবাড়ী, ভাটারা, মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং, মোহাম্মদপুর বছিলা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকা, খিলক্ষেত বনরূপা এবং কালশী বালুর মাঠে। ইতোমধ্যেই এসব এলাকায় স্থান নির্ধারণ ও প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকবেন।
অন্যদিকে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে সারুলিয়া ছাড়াও খিলগাঁও, পোস্তগোলা, কমলাপুর, ধোলাইখাল, শ্যামপুর, দনিয়া কলেজ মাঠ ও আমুলিয়া এলাকায় অস্থায়ী হাট বসানো হবে। এসব হাটে গরু পরিবহন, পার্কিং, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া হাটের চারপাশে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
তবে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বছর আফতাবনগর ও মেরাদিয়া এলাকায় হাট বসবে না। আদালত মনে করছে, এই এলাকাগুলো পরিকল্পিত আবাসিক হওয়ায় সেখানে হাট বসালে জনদুর্ভোগ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ডিএসসিসি’র বিজ্ঞপ্তি থাকা সত্ত্বেও এই দুই এলাকায় হাট বসানোর অনুমতি নেই।
এদিকে, কোরবানির পশুর হাট ঘিরে ঢাকাবাসীর মাঝে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। পশুপালনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসায় এ বছর গরুর দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খামারিরা জানিয়েছেন, মাঝারি আকারের গরুর দাম ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে, আর বড় গরুর দাম দেড় থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত গড়াতে পারে। ফলে অনেকেই অনলাইন ডিজিটাল হাটে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যেখানে সরাসরি খামারি থেকে কিছুটা কম দামে গরু কেনার সুযোগ থাকছে।
সবমিলিয়ে, আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর হাটগুলোতে পশু কেনাবেচার পাশাপাশি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যবিধি, পরিচ্ছন্নতা ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবার নগরবাসীকে স্বস্তিদায়ক কোরবানির হাট পরিবেশ উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।