স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে বরিশালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

 বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) চিকিৎসা সেবা আধুনিকায়ন, স্বাস্থ‍্যখাতের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

শনিবার (৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলার যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ছাত্র জনতা ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গত ১৪ দিন ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। গতকাল ছিল মহাসড়ক অবরোধের ব্লকেট তৃতীয় দিন। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছিলেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, রোগী হয়রানি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের কারণে সাধারণ মানুষ ন্যূনতম চিকিৎসা পাচ্ছে না।

আন্দোলনকারীদের মূল তিন দাবি হলো- স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আধুনিকায়ন, জনগণের জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

 

আন্দোলনকারী ছাত্র সাব্বির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে রোগীরা সঠিক সেবা পান না, বরং বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন। ডাক্তাররা রোগীদের নিজেদের ক্লিনিকে পাঠানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে স্লিপ ধরিয়ে দেন। হাসপাতালের অনেক সরঞ্জাম অকেজো করে রাখা হয়, অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যায় না। অথচ পুরো হাসপাতাল চলে জনগণের টাকায়।

সংগঠক মহিউদ্দিন রণি বলেন, শুধু আশ্বাসে হবে না, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নিজে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

অবরোধের কারণে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত বাস ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ে। বিপাকে পড়েন হাজারো যাত্রী, যাদের মধ্যে অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিকল্প পথে যেতে বাধ্য হন। পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং কুয়াকাটার সঙ্গে বরিশালের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির সিকদার জানান, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। এদিকে এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন সিকদার বলেন, নথুল্লাবাদ এলাকায় যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের জনদুর্ভোগ বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।