সঠিক পরিকল্পনা, সরকারি প্রণোদনা এবং কৃষি বিভাগের সক্রিয় সহায়তায় ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে এক নতুন কৃষি বিপ্লবের ধারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরগঞ্জে প্রায় ৩৪৫ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান-৯৮, ৪৮, ৮৫ ও বিনা ধান-১৯ জাতের আউস ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের উৎসাহ দিতে দেওয়া হয়েছে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার। কৃষি বিভাগের এমন সময়োপযোগী উদ্যোগ এবং মাঠ পর্যায়ের তদারকিতে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ।
সরেজমিনে উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের চর পুম্বাইল, নিজপুবাইল, পাঁড়া পাঁচাশি, বু-পাঁচাশি, রংপুর ও পাইকুড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে—একসঙ্গে অনেক কৃষক মিলে একই জমিতে আউস চাষ করছেন। এই কম্বাইন্ড পদ্ধতিতে চাষাবাদে একদিকে যেমন ফসলের পরিচর্যা সহজ হয়েছে, অন্যদিকে পশুপাখি বা পোকামাকড়ের আক্রমণও কমে এসেছে।
স্থানীয় কৃষক সিরাজ আলী পাঠান, এমদাদুল হক, আলী হোসেন ও আলম মিয়া বলেন, কম্বাইন্ড পদ্ধতিতে আউস চাষ করায় ফসল দেখা-শোনা সহজ হয়, ক্ষতির সম্ভাবনাও কম থাকে। এ বছর প্রতি কাঠায় সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার মণ ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
তরুণ কৃষক দীন ইসলাম জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে পতিত জমিতে আউস ধান চাষ করেছি। এতে আমরা যেমন বাড়তি ফসল পেয়েছি, তেমনি গরুর খাদ্য হিসেবেও ন্যাড়া সংগ্রহ করতে পারছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী আখসার খান বলেন, কম্বাইন্ড পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকরা অনেক বেশি উপকৃত হচ্ছেন। এতে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপা রানী চৌহান জানান, সরকারি প্রণোদনা ও টেকনিক্যাল গাইডলাইনের মাধ্যমে কৃষকদের আউস চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় এখন কৃষকরা আউস চাষকে আবারও লাভজনক হিসেবে বিবেচনা করছেন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দুই সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হবে বলে জানা গেছে। আউস মৌসুমে এমন সাফল্য ঈশ্বরগঞ্জের কৃষকদের মাঝে নতুন আশার বার্তা নিয়ে এসেছে। পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি।