কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সহকারী শিক্ষক কর্তৃক মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে বেথইর সরকারী প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে  অপসারণেরচেষ্টা, বহিরাগত ভাড়াটে লোকদের দ্বারা হুমকির  প্রতিবাদে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা মানববন্ধন ও র‍্যালি  করেছেন।

বৃহস্পতিবার ( ২৪ জুলাই)  বিকাল  চারটায় কটিয়াদী  উপজেলার বেথইর প্রাইমারি স্কুল  চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন স্কুলের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
 
হাফেজ গোলাম  কিবরিয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মোঃ বাচ্চু মিয়া, রওশনারা বেগম, জামিলা আক্তার, পারভিন আক্তার, তাকভীর হোসেন, ফাইজা, নুসরাত,  মিতালী, নিবা, শ্রাবন্তী প্রমোখ। 

বক্তারা বলেন, কথিত অভিযোগকারী  সহকারী  শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান  নিজেই একজন ফাঁকিবাজ শিক্ষক , সময় মত ক্লাসে যাওয়া আসা করে না,  শ্রেণীকক্ষে সারাক্ষণ মোবাইল ও রূপচর্চা  নিযে ব্যস্ত থাকে, প্রধান শিক্ষক- সহকর্মীদের সাথে ভালো আচরণ করে না, বাবার  ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চলে। বক্তারা আরো জানান,  অভিযোগকারী শিক্ষিকার  স্বামী সাইদুর রহমান রুবেল ছাত্রলীগের নেতা ছিল। আওয়ামী লীগের সময় ছাত্রলীগ করার কারণে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হয়েছেন। বর্তমানে  তার স্বামী মনোহরদী উপজেলায়  কর্মরত রয়েছেন।
  অবিলম্বে এই শিক্ষকের অপসরণের  দাবি জানান তারা। 



উপজেলার বেথইর সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়টি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি বিদ্যাপীঠ। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকা ইয়াসমিন  সৎ ও নিষ্ঠাবান। তিনি আগামী বছর অবসর নিবেন।  বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় তাদের অবদান অপরিসীম। এমনকি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় পুরো জমিটি তাদের পরিবার   দান করেছেন। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের  কথিত শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান নিজের  স্বার্থ হাসিলে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মেনে চলে না। সহকর্মীদের সাথে অসৎ আচরণ করেন। তার বাপের বাড়ির লোকজন বিএনপি করেন। এই ক্ষমতা দেখিয়ে চলে, সহকর্মী ও প্রধান শিক্ষককে তোয়াক্কা  করে না।  আরাম আয়েশে  থাকার জন্য কিভাবে প্রধান শিক্ষককে সরানো যায়,  সেই স্বপ্নে বিভোর। এজন্য প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার  বরাবরে ২৬ জুন লিখিত অভিযোগ দেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (২৩ জুলাই) কটিয়াদী উপজেলা প্রাইমারি শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও সহকারী প্রাইমারি  শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান  বিদ্যালয়ে তদন্তের জন্য আসেন। তখন সহকারি  শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান পরিকল্পনা মাফিক বাপের বাড়ি (কুলিয়াচর) 
থেকে ৫০-৬০ জন ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আসেন। তারা তদন্ত কাজে হস্তক্ষেপ করেন, প্রধান শিক্ষককে বদলি  না করলে তদন্ত কর্মকর্তাদের বদলি করার হুমকি ধমকি দেন। জোর করে বিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করাতে চাপ প্রয়োগ করছেন। যা বিদ্যালয়টির ভাবমূর্তি নষ্ট ওই শিক্ষকের হীনউদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সামিল। এমনকি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তার কোনোটারই সত্যতা নেই।

 এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের বিপথগামী করছেন বিদ্যালয়ের কথিত শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান উর্মি।
 
মুমুরদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাদিউল ইসলাম জানান, বহিরাগত লোক দ্বারা তদন্ত কাজে বাধা প্রদান করা আমাদের জন্য লজ্জাকর। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা উচিত। 


মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা একটি রেলি বের করেন। রেলিটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে  বেথইর আনন্দবাজার প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাপ্তি ঘটে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা  কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম  তালুকদার   জানান, প্রধান শিক্ষককে যেন অপসারণ না করা হয় সেজন্য শিক্ষার্থীরা ও  এলাকাবাসীবা  দাবি জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের  বিরুদ্ধে   অভিযুক্তকারী যে অভিযোগ গুলো দিয়েছে তা সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ  করা হবে।