আগামী ২৫বৈশাখ (৮মে) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসরে কবির কাচারী বাড়িতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কাচারী বাড়ির চারপাশে বর্তমানে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। কবিগুরুর জন্ম দিন উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কাচারীবাড়ি পতিসরে তিনদিনের বিস্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে আগত অতিথিবৃন্দের নামও চ’ড়ান্ত করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্ম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। সভায় যথাযথ মর্যাদায় ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে দুই কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের কর্ম পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সভায় জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, জেলা পুলিশের কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, সদর, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অন্যান্য কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সংস্কৃতিকর্মী, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পতিসর বরীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘরের সহকারি কাস্টোডিয়ান ইশতিয়াক আহমেদ জানান, কবীর জন্মদিন উপলক্ষে পতিসরে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দেবেন্দ্র মঞ্চ রং করা, প্যান্ডেল স্থাপন, তোরণসহ অন্যান্য কাজগুলো শেষের পথে। এছাড়া পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানও অব্যাহত রাখা হয়েছে। আগামী ৭মের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান কবিগুরুর জন্ম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে এবার কেন্দ্রীয় ভাবে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না কাচারীবাড়ি পতিসরে। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয় ভাবে তিন দিনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথমে দিনে বরীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। এছাড়া দেবেন্দ্র মঞ্চে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজ সংস্কৃতি ও স্থানীয় বরীন্দ্র গবেষকদের অংশগ্রহণে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা শেষে জেলা, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর নিয়মিত শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে বরীন্দ্র সংগীত। তিনদিনের অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীরা যেন তাদের পেশাগত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারেন সেই জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন জেলার বিভিন্ন স্থানের ও স্থানীয় বরীন্দ্র গবেষক ও বরীন্দ্র ভক্তদের মধ্য থেকে কারা রবীন্দ্র আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন সেই নামের তালিকা তৈরি করবেন উপ-কমিটির সদস্যরা। প্রতি বছরই বরীন্দ্র জন্ম দিনে পতিসরে বসে গ্রামীণ মেলা। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো স্থানীয় একটি কলেজ মাঠে ঐতিহ্য হিসেবে তিনদিন স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন বরীন্দ্র মেলার আয়োজন করবে। যেখানে মাছের মেলা, জামাই মেলাসহ অন্যান্য গ্রামীন লোকজ সংস্কৃতির পসরা থাকবে। মেলায় শিশুদের জন্য থাকবে আকর্ষনীয় বিভিন্ন আয়োজন। থাকবে সাকার্স, ক’পের মধ্যে মোটরসাইকেল খেলা, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে রবীন্দ্র মেলা, বরীন্দ্র সংস্কৃতি চর্চা, বরীন্দ্র সংগীত, বরীন্দ্র কবিতা, বরীন্দ্র গবেষণা সবগুলো বিষয়কে নিয়ে একটি বার্তা এই অঞ্চলের মানুষদের কাছে পৌছে দিতে চাই। গৃহিত অনুষ্ঠান সূচি প্রচার করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলো সুচারু ভাবে সম্পন্ন করতে গঠিত উপ-কমিটিসহ প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ সকলের প্রতি আহবান জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।