কুড়িগ্রামের নাগেশ^রীতে কুটিরশিল্প মেলায় নিয়ে গিয়ে চেতনানশক কোমল পানীয় খাইয়ে ১০ম শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তারই আত্মীয় রাব্বীসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে।

লোকলজ্জ্বার ভয়ে স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে মেয়েটি আরও অসুস্থ হয়ে পরলে ঘটনার ৫দিন পর তাকে নাগেশ^রী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনায় নাগেশ^রী থানা পুলিশ মামলা গ্রহনের পর পরই অভিযুক্ত রাব্বীকে গ্রেফতার করলেও বাকী আসামীদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ জুলাই নাগেশ^রী ডিএম একাডেমি ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত হস্ত, বস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলায়। মামলার অপর আসামীরা হলেন জুলহাস মিয়া, মোতালেব মেম্বার ও শফিয়ার রহমান ওরফে শফি কন্ট্রাক্টর।
মামলা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রাব্বী মিয়া ওই কিশোরীর জ্যেঠাতো বোনের স্বামী। সে প্রায়ই কিশোরীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতো। এনিয়ে রাব্বীকে সতর্ক করেন কিশোরী। শহরে কুটিরশিল্প মেলা দেখাতে নিতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পনামতো কিশোরীকে এক ফাঁকে চেতনানাশক কোমল পানীয় খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পরে। এই সুযোগে কিশোরীকে রাব্বী নাগেশ^রীর গাগলা খামারটারীতে অবস্থিত নিজের ফাঁকা বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তাকে আবারও চেতনানাশক খাইয়ে নাগেশ^রীতে দূরপাল্লার বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। সকালে বাসের সুপারভাইজার কিশোরীকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে তাকে নিজের বোনের বাসায় নিয়ে যান। রাতে ফিরতি বাসে তাকে আবারো নাগেশ^রীতে পাঠিয়ে দেন।
এদিকে কিশোরীটি পরদিন নাগেশ^রী বাসস্টান্ডে নামলে রাব্বী তার সহযোগী একই উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের গাটিরখামার এলাকার ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া, ওই ইউনিয়নের পূর্ব সাপখাওয়া এলাকার শফিয়ার রহমান ওরফে শফি কন্ট্রাকটর এবং নাগেশ^রী পৌরসভার বাঁশেরতল এলাকার জুলহাস মিয়াসহ কিশোরীকে জোরপূর্বক পৌলসভার হাসেমবাজার এলাকার ফারুক হোসেনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানেও কিশোরীকে ধর্ষণ করে রাব্বী। পরে কিশোরীকে চেতনানাশক খাইয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় নাগেশ^রী বাসস্টান্ডে এনে জুলহাসের হাতে তুলে দেয় রাব্বী। পরে কিশোরীকে অটোরিক্সায় তুলে রায়গঞ্জ বোর্ডের বাজারের পাশে শফি কন্ট্রাক্টরের আত্মীয়ের বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে রাতভর পালাক্রমে তার উপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়। এঘটনা কাউকে জানালে তাকে খুনের হুমকী দেয়া হয়। পরে কিশোরীকে বাড়ী থেকে বের করে দেয় ধর্ষকরা। অসুস্থ্য কিশোরী সেখান থেকে তার নানার বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়।
মামলার বাদি কিশোরীর বাবা জানান, আমি আসামীদের কঠিন থেকে কঠিনতর বিচার চাই। যারা যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল আদালত যেন তাদেরকে যেন চরম শাস্তির ব্যবস্থা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুর রহিম জানান, মেয়েটি মানসিক ও শারিরিকভাবে অসুস্থ্য হওয়ায় ঘটনার ১০দিন পরে গত ৩ আগস্ট নাগেশ^রী থানায় একটি এজাহার দাযের করেন। এর পরপরই আমরা মূল আসামী বাপ্পীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। বাকী আসামীদের ধরতে জোড় তৎপরতা চলছে।
 এ ব্যাপারে নাগেশ^রী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে আমরা তদন্ত করছি। বাকী আসামীদের ধরতে সবরকমের চেষ্টা চলছে। #