আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থিত তাঁবুতে হামলা চালালে আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিকসহ মোট সাতজন নিহত হন। নিহত সাংবাদিকরা হলেন—আনাস আল শরীফ (২৮), আল জাজিরা সংবাদদাতা মোহাম্মদ কুরেইকেহ, ক্যামেরা অপারেটর ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল এবং মোয়ামেন আলিওয়া।
আনাস আল শরীফ দীর্ঘদিন ধরে উত্তর গাজা থেকে নিয়মিত প্রতিবেদন করে আসছিলেন। নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) পোস্টে তিনি জানান, গাজার পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে ইসরায়েলের প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ চলছে। ওই পোস্টে শেয়ার করা ভিডিওতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ এবং আকাশে কমলা আলোর ঝলক ধরা পড়ে।
হামলার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করে, আনাস আল শরীফ হামাসের একটি শাখার নেতৃত্ব দিতেন এবং তাদের কাছে ‘প্রমাণ’ আছে। তবে ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা বলেন, সহিংস কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই; তিনি নিয়মিত মাঠ থেকে সংবাদ প্রতিবেদন করতেন।
আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এই হত্যাকাণ্ড ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘উসকানিমূলক প্রচারণার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গত জুলাইয়েও ইসরায়েলি সেনাদের মুখপাত্র সামাজিক মাধ্যমে আনাসকে হামাসের সদস্য বলে অভিযোগ করেছিলেন, যা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করে।
কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে জানায়, আনাসকে ইসরায়েলি সামরিক অপপ্রচারের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল এবং তার নিরাপত্তা নিয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আল জাজিরার কয়েকজন সাংবাদিক ও তাদের স্বজনও রয়েছেন।