ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে দুপুরের দিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও গালিগালাজ এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাগছাসের নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। এতে অন্তত কয়েকজন আহত হন এবং বর্তমানে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, "ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে আমাদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুকের ওপর হামলা চালানো হয়। ফারুক ‘জুলাই আন্দোলনের’ একজন সক্রিয় কর্মী এবং ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হন। অথচ তাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এমনকি আমাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।"
তিনি অভিযোগ করেন, জবি ছাত্রদলের ব্যানারে কিছু অছাত্র ও বহিরাগত ব্যক্তি সন্ত্রাস কায়েম করছে এবং শিক্ষকরা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ঘটনার সত্যতা সহজেই পাওয়া যাবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ও বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, "আমাদের এক আন্দোলনকর্মীকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতিতেই হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।"
অপরদিকে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে ঢুকে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। ফেসবুকে তারা আগেই পোস্ট দিয়ে জানিয়েছিল তারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আজকের ঘটনাও তারই ধারাবাহিকতা।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরো প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন। একজন সিনিয়র অধ্যাপকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর মধ্যে এ ঘটনার জেরে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।