বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মাগুরা জেলার ভায়না মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, “৫ আগস্ট জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হবে। এর আগে ৩ আগস্টের মধ্যে আমরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের কাছ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ দেখতে চাই। যদি সেটি না পাই, তাহলে শহীদ মিনার থেকে আন্দোলনের নতুন সূচনা হবে। আমাদের দাবি উপেক্ষিত হলে আমরা ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আবারও রাজপথে নামব।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে, তার অংশ হিসেবে এখন আমাদের প্রয়োজন ফ্যাসিবাদের বিচার, মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং একটি নতুন সংবিধান। বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে, আমাদের সংগ্রামকে আরও জোরদার করতে হবে।”
নাহিদ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “মাগুরায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দশজন শহীদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়, সেই জন্য আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের দাবি আদায় করেই ছাড়তে হবে।”
তিনি জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা সোচ্চার হোন। এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রমে নজর রাখুন, দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন। মাগুরায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে এনসিপির সাংগঠনিক ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে।”
এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’র দশম দিনে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা পৌঁছান পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। সদর উপজেলার ইছাখাদা বাজার থেকে মাগুরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা গাড়িবহরে যোগ দেন এবং তাদের অভ্যর্থনা জানান।
পরে নেতা-কর্মীরা মাগুরা সদর উপজেলা চত্বর থেকে শহরের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি ভায়না মোড়, চৌরঙ্গী মোড়, কলেজ রোড, সৈয়দ আতর আলী সড়ক এবং ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড ঘুরে আবার ভায়না মোড়ে এসে শেষ হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
পথসভা শেষে এনসিপির নেতারা নড়াইলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানেও জুলাই সনদ ও ঘোষণা বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মসূচি চলবে বলে জানা গেছে।
সংক্ষিপ্ত মন্তব্য:
এই প্রতিবেদনটি থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এনসিপি সরকারকে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র নিয়ে চাপ প্রয়োগ করছে এবং এই দাবিকে কেন্দ্র করে সংগঠনটি গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগস্টের শুরুতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।