আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর অংশ হিসেবে নির্বাচনী উপকরণ কেনাকাটার একটি বড় ধাপ প্রায় সম্পন্ন করেছে কমিশন। টেন্ডারের মাধ্যমে ৮০ লাখ ৫ হাজার পিস ব্যাগ, সিল ও ব্যালট বাক্সের লক এবং ২৩ হাজার কেজি লাল গালা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করতে এই উপকরণগুলো প্রয়োজন। 

জানা গেছে, এই বিশাল অঙ্কের ক্রয়াদেশটি টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় নির্বাচন বিশাল কর্মযজ্ঞ। এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ সঠিক সময়ে সংগ্রহ করা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। স্বচ্ছতার সঙ্গে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা এই ব্যাগ, সিল ও লকের ক্রয়াদেশ চূড়ান্ত করেছি। আশা করছি, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে সরবরাহকারীরা এসব উপকরণ ইসির কাছে হস্তান্তর করবে। 

৮ ধরনের মালামাল সংগ্রহ করছে ইসি

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই ৮ ধরনের মালামাল ক্রয় করছে। এর মধ্যে ৭ ধরনের মালামাল উৎপাদন শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ব্রাস সিল ক্রয়ে তিনবার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। মানসম্পন্ন পণ্য না হওয়ায় এর আগে দুবার ব্রাস সিল টেন্ডার বাতিল করা হয়েছিল।

পণ্যের তালিকা

লাল গালা- ২৩ হাজার কেজি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক- ৫০ লাখ পিস, অফিসিয়াল সিল- ৮ লাখ ৪০ হাজার পিস, মার্কিং সিল:- ১৭ লাখ ৫০ হাজার পিস, ব্রাস সিল- ১ লাখ ১৫ হাজার পিস (টেন্ডার ৫ আগস্ট খোলা হবে), গানি ব্যাগ- ১ লাখ ১৫ হাজার, হেসিয়ান বড় ব্যাগ- ৭০ হাজার, হেসিয়ান ছোট ব্যাগ- ১ লাখ ১৫ হাজার।

সময়সীমা ও গুণগত মান যাচাই প্রক্রিয়া

বিশাল এই কেনাকাটা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ বলেন, মোট আট ধরনের পণ্য ক্রয় করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি বাদে বাকি পণ্যগুলোর ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫৬ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে সব মালামাল হাতে পাব।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটি পণ্যের জন্য আমরা একটা স্পেসিফিকেশন করে দিয়েছি। স্পেসিফিকেশনের আলোকে তাদের স্যাম্পল দিতে বলেছি এবং স্যাম্পলটি আমরা কমিটির কাছে পাঠাচ্ছি। স্যাম্পল ঠিক থাকলে আমরা সেটা ওকে করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যখন মালামাল দেবে, তখন ওই স্যাম্পলের সঙ্গে মিলিয়ে পণ্য নেওয়া হবে।

ইউএনডিপির সহযোগিতা

ইউএনডিপি কোন কোন পণ্য সরবরাহ করবে- এমন এক প্রশ্নে অতিরিক্ত সচিব আলী নেওয়াজ জানান, ইউএনডিপি অমোচনীয় কালি এবং স্ট্যাম্প প্যাড দেবে।

তফসিল ঘোষণা ও সার্বিক প্রস্তুতি

ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে শেষ করা হবে, তবে তফসিল ঘোষণার ব্যাপারটা একান্তভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। আমাদের সব প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে।

অক্টোবরের মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে কিনা এমন প্রশ্নে ইসি সচিব জানান, ইসির কিছু কাজ বাকি রাখতে হবে, যেটা অক্টোবরের পরে বলা যাবে। 

তিনি বলেন, আজ আমি বেশ কিছু টাইমলাইন ধরে কথা বলেছি। টাইমলাইন, কর্মপরিকল্পনা, অ্যাকশন প্ল্যান বলুন- কাজের এ ব্যপ্তিটা আসল। 

ইসি সচিব জানান, জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা যে টাইমলাইন দিয়েছেন, সে অনুযায়ী কাজ করছি।