বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঘোষিত “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–২০২৪” স্মরণে আয়োজিত কেন্দ্রীয় স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার অর্জন করেছেন বাগেরহাট সদর উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী মো. রবিউল ইসলাম বাদশা।
রবিবার (৩ আগস্ট), রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে “জুলাই জাগরণ: নব উদ্যমে বিনির্মাণ” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ।
জাতীয় পর্যায়ের এ আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জমা পড়া তিন হাজারের অধিক লেখার মধ্য থেকে বাছাই করা হয় শীর্ষ ৫০টি স্মৃতিলেখন। এর মধ্যে ১৭তম স্থান অর্জন করেন বাগেরহাট সরকারি প্রফুল্লচন্দ্র কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম। তার রচিত লেখাটির শিরোনাম ছিল “রক্তাক্ত ৪ঠা আগস্ট”।
পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন সম্মাননা ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং নগদ ২০,০০০ টাকা।
পারিবারিকভাবে কঠিন সময় পার করা রবিউল পিতৃহীন। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই তিনি এগিয়ে চলেছেন। জাতীয় পর্যায়ে এ অর্জনে তার সহপাঠী, এলাকাবাসী এবং আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের মাঝে আনন্দ ও গর্বের আবহ তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট বাগেরহাট কোর্ট চত্বরের সামনে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন রবিউল এবং পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নিজ অনুভূতি প্রকাশ করে রবিউল বলেন,
“আলহামদুলিল্লাহ! সারা দেশের হাজারো প্রতিযোগীর মাঝে জাতীয় পর্যায়ে ১৭তম অবস্থানে আসতে পেরেছি—এটা নিঃসন্দেহে আমার জীবনের এক গর্বিত মুহূর্ত। ‘রক্তাক্ত ৪ঠা আগস্ট’ আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ, স্মৃতির ঝলক। এই লেখা কেবল কিছু শব্দ নয়, বরং একটি আন্দোলনের সাক্ষ্য, আমার জীবনের অংশ।”
রবিউলের আন্দোলনের সহযোদ্ধা ও এলাকাবাসী রেজওয়ান শেখ বলেন,
“‘রক্তাক্ত ৪ঠা আগস্ট’ শুধু একটি লেখা নয়, বরং আমাদের ত্যাগ, সংগ্রাম ও চেতনার জীবন্ত দলিল। রবিউলের এই অর্জন শুধু তার নয়, পুরো বাগেরহাটের গর্ব। শিবিরের চিন্তা-চেতনার এই বিজয় আমাদেরকে সাহস ও প্রেরণা জোগায়।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, মঞ্জুরুল ইসলাম, বুয়েটের শিক্ষক ড. ফখরুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ, শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবন্দ।