সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় গত দুইদিনে তিনটি মসজিদ হতে দানবাক্স, মাইকের এমপ্লিফায়ার, ব্যাটারী ও ফ্যান চুরীর ঘটনা ঘটছে। মসজিদ তিনটি হলো উপজেলার ৪ নং দরবস্ত ইউনিয়ন এলাকার দীঘিরপাড় জামে মসজিদ, উত্তর দরবস্ত জামে মসজিদ ও করগ্রাম এলাকার হাজী আব্দুর রহিম জামে মসজিদ।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৭ই জুন) গভীররাতে কোন এক সময় করগ্রাম ও উত্তর দরবস্ত জামে মসজিদে ও সোমবার (১৬ই জুন) গভীররাতে দীঘিরপাড় জামে মসজিদে চুরির ঘটনা ঘটে।
দীঘিরপাড় জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ মোঃ আবদুল্লাহ্ জানান, সোমবার দিবাগত রাত গভীর সময়ে মসজিদের একটি দানবাক্স সহ দুইটি মাইকের এমপ্লিফায়ার মেশিন ও ইমাম সাহেবের মিম্বরের উপরে লাগানো একটি ফ্যান চুরী হয়ে যায়। এ সময় স্হানীয় এক তাবলিগ জামাতের মুসল্লীর ব্যাগ মসজিদে রাখা ছিলো সেটাও চুরি হয়। তিনি বলেন চুরি যাওয়া মেশিন, ফ্যানের বাজারমূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা সমপরিমাণ। চুরি হওয়া দানবাক্সে গত ৬ মাসের দানের অর্থ গচ্ছিত ছিলো বলে তিনি জানান।
এদিকে উত্তর দরবস্ত জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মনির উদ্দিন বলেন, গতরাত (মঙ্গলবার) সাড়ে তিন ঘটিকায় তিনি মসজিদে গিয়ে দুইটা তালা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় মসজিদের দানবাক্সের তালা খুলা এবং তাতে কোন টাকা পয়সা ছিলো না। পাশাপাশি চোরচক্রের সদস্যরা মাইকের এমপ্লিফায়ার মেশিন ও ব্যাটারী চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, প্রতি তিনমাসে দানবাক্স খুলে টাকার হিসাব সংগ্রহ করা হতো।চুরি হওয়া দানবাক্সে গত দুই মাসের দানের অর্থ ছিলো বলে তিনি জানান। এ ছাড়াও চুরি হওয়া মেশিন ও ব্যাটারীর দাম আনুমানিক ৬৫ হাজার টাকা সমপরিমাণ বলে তিনি জানিয়েছেন।
একই দিনে দরবস্ত করগ্রাম এলাকার হাজী আব্দুর রহিম জামে মসজিদে গভীর রাতে চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মসজিদের সভাপতি হাজি আবদুল মজিদ বলেন, চুরির ঘটনায় মসজিদের দুইটি এমপ্লিফায়ার মেশিন, একটি সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারী সহ ইমাম সাহেবের জামা কাপড় চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া পন্য সামগ্রির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা সমপরিমাণ। এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকালে জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ৪ নং দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার বলেন, তিনটা চুরির ঘটনায় স্হানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তিনটি মসজিদ কমিটিকে থানায় জিডি করার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া মঙ্গলবার ইউনিয়নের সকল সদস্য ও মহিলা সদস্যদের নিয়ে জরুরী বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্হানীয় ভাবে মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিকভাবে সকলকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন তিনটি চুরির ঘটনা একটি সংবদ্ধ চোরচক্রের কাজ হয়ে থাকতে পারে। যদি এরা বহিরাগত হয় তাহলে অবশ্যই স্হানীয় কোন চক্র তাদের সহযোগিতা করতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসনকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, মসজিদে চুরির ঘটনাটা খুব নিন্দনিয়। চুরি ঘটনা রোধে পুলিশের টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয় তিনি স্হানীয়দের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সন্দেহভাজন ও বহিরাগত ব্যাক্তিদের আনাগোনা লক্ষ্য করলে পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
