নাটোর সদর উপজেলার ঔষধী গ্রাম লক্ষীপুর খোলাবাড়ীয়ায় তিনটি অনুমোদনহীন কারখানায় নকল যৌন উত্তেজক ওষুধ ও কসমেটিকস তৈরির বিরুদ্ধে রোববার বিকেলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। ০৪ আগস্ট ২০২৫, রবিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এনএসআই নাটোর কার্যালয়ের তথ্য ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নাটোর এবং সেনাবাহিনীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়।

অভিযানকালে মোবারক স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ অনুমোদনবিহীন ওষুধ, ট্যাবলেট ও কেমিক্যাল জব্দ করা হয়। মোবারক স্টোরের মালিক মোঃ শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঔষধ প্রশাসন কোর্টে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে লেবেলবিহীন কৌটার হালুয়া ১৬ পিস, সুফলা বটিকা ৩০২ পিস, ডায়াবেটিস বটিকা ২৯৮ পিস এবং ট্যাবলেট/ক্যাপসুল তৈরির একটি মেশিন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তাদের তিনটি গুদামে থাকা বিপুল পরিমাণ অনুমোদনবিহীন ওষুধ তৈরির কেমিক্যাল ও অন্যান্য উপকরণ সিলগালা করা হয়েছে। অভিযানের খবর পেয়ে মালিক শরিফুল ইসলাম পালিয়ে যায়।

একই সময়ে নাটোর ভেষজ মার্ট নামে আরেকটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে যৌন উত্তেজক স্যাফরন বড়ি ৭০০ কৌটা জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে বিপুল পরিমাণ খালি কৌটা, ট্যাবলেট, লেভেল ও প্যাকেট ধ্বংস করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ—রাজু, সাব্বির, সজল ও সেলিম—অভিযানের সময় আটক হন এবং তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অন্যদিকে নাটোর ভেষজ বাড়ি নামের একটি কসমেটিকস তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল, অনুমোদনহীন কসমেটিকস সামগ্রীসহ বিপুল পরিমাণ উপাদান ধ্বংস করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

এই তিনটি কারখানায় জব্দ ও ধ্বংসকৃত ওষুধ, কসমেটিকস এবং কেমিক্যাল সামগ্রীর বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অভিযান চলাকালে পুরো এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), সেনাবাহিনী ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এ সমন্বিত অভিযানে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।