‎নেত্রকোনায় ট্রেনে চাঁদা তুলতে বাঁধা দেয়ায় তৃতীয় লিঙ্গের নেতাদের উপর লিঙ্গ পরিবর্তনের মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল। মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ১০ উপজেলার শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

বৃহস্পতিবার (০৭ আগষ্ট) দুপুরে জেলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনের সড়কে ১০ উপজেলার তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যের ব্যানারে প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়।

‎এসময় তৃতীয় লিঙ্গের শতাধিক সদস্যের উপস্থিতিতে দলনেতা লতা, স্বর্ণা, কমলাসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

‎মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের নামে ট্রেনে চাঁদা তুলে আসছিল একটি চক্র। সাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ আসে দলনেতা লতার নিকট। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ট্রেনে চাঁদা উত্তোলন করতে বারহাট্টা উপজেলার নয়ন ওরফে অন্তরাকে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন নয়ন। পরে নিজের চুল কেটে নিজেকে পূর্ণ পুরুষ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিডিও করেন। তিন বছর পূর্বে তাকে একটি জোরপূর্বক পুরুষাঙ্গ কেটে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরের কথা দাবি করেন। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।

‎চাঁদা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নয়ন ওরফে অন্তরা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করেন জেলার প্রকৃত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা।

‎তৃতীয় লিঙ্গের মদন উপজেলার দলনেতা স্বর্ণা বলেন, আমাদের গুরুমা চাঁদা তুলতে বাধা দেওয়া ফেসবুকে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে নয়ন ওরফে অন্তরা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও বিচার চাই। নেত্রকোনায় এক্সিডেন্ট করলে রেফার্ড করে ময়মনসিংহ। আর মদন একটি প্রত্যন্ত উপজেলা। সেখানে কি সার্জারি করতে পারে। সে এগুলোর প্রমান দিক। প্রশাসন যেন তদন্ত করে এর সত্যতা বের করে।

‎জেলার দলনেতা লতা বলেন, নয়ন ওরফে অন্তরা ১৫ বছর ধরে হিজড়া পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। কিন্তু সে পূর্ণপুরুষ। তার স্ত্রী সন্তান আছে। কিছুদিন ধরে সে ট্রেনে ছাত্র ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে আমাদের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। আমরা মানুষের কাছে হাত পেতে খাই। আমরা অবহেলিত। কিন্তু নয়নের মত চাঁদাবাজদের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে। তাকে ট্রেনে চাঁদা তুলতে বাধা দেওয়ায় আমাদের নামে ফেসবুক মানহানিকর অপপ্রচার চালাচ্ছে। মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হুমকি দিচ্ছে যে, আমার পিছনে লাগছস এখন ঠেলা সামলা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ও বিচার চাই।

‎এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নয়ন ওরফে অন্তরা জানান, আমাকে তিন বছর আগে জোরপূর্বক অজ্ঞান করে পুরুষ থেকে হিজরা বানিয়েছে। কিন্তু মদনে এ ধরনের সার্জারি হয় কিনা এবং এতদিন কেন অভিযোগ করেনি প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

‎পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।